খড়-কঞ্চি-মাটি-রং কর্মযজ্ঞে দুর্গা দেবীর রূপদান সমাপ্ত। শাস্ত্রমতে, শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিল্লষষ্ঠী তথা বেলবৃক্ষের নিচে পূজার মধ্য দিয়ে দেবীকে আহ্বান করা হবে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) মহাসপ্তমীতে বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে মূল মন্দিরে প্রতিমা স্থাপন করার পর শাস্ত্র মেনে ত্রিনয়নী দেবীর চক্ষুদান ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
এরপর দেহশুদ্ধি করে আসন পূজা করে ঘট স্থাপন করে মূল পূজার কার্যক্রম শুরু করা হবে এমনটি জানিয়েছেন পুরোহিত রজত কান্তি চক্রবর্তী।
শারদীয় দুর্গোৎসবে এবার সিলেটে পারিবারিক ও সার্বজনীন মিলিয়ে ৬০৮টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত।
তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে ১০টি। গত বছর ৫৯৮টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এবার নগর এলাকায় সার্বজনীন ৫১টি, আর নগরে ১৫টিসহ পরিবারিক পূজা হবে ৫৮টিতে। বাকিগুলো সার্বজনীন।
শুক্রবার থেকে দেবীর আরাধনায় মগ্ন হয়ে ভক্তকূল ঘুরে বেড়াবেন মণ্ডপে মণ্ডপে। ঢাকের কাঠি ঢেম কুড় কুড়, ঘণ্টা-কাসার ঢং ঢং-টিং টিং, মঙ্গল শাখ ও উলুধ্বনিতে মুখরিত হবে মণ্ডপগুলো।
রজত কান্তি চক্রবর্তী বলেন, দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে ছয় দিনের এ শারদীয় দুর্গোৎসবের শুক্রবার ষষ্ঠী পূজা, শনিবার মহাসপ্তামী, আমন্ত্রণ ও অধিবাস, রোববার (৬ অক্টোবর) দেবীর মহাঅষ্টমী বিহিত ও কুমারীপূজার সঙ্গে সন্ধিপূজা, সোমবার (৭ অক্টোবর) নবমী বিহিত এবং মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) মহাদশমীতে বিহিত পূজা। সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন শেষে সন্ধ্যা আরত্রিকের পর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ ধর্মীয় উৎসব।
তিনি বলেন, এবার মর্ত্যলোকে ঘোড়ায় চড়ে আসবেন দেবী। দশমীতে জল বিসর্জনায় শিবের সঙ্গে স্বামীর গৃহে ফিরে যাবেন ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে।
রজত কান্তি চক্রবর্তী বলেন, দেবী অনেক রূপে আসেন। বৈষ্ণবী রূপে আসা শান্তির প্রতীক। আসুরিক শক্তিতে আসেন অসুর বদ করতে। ঘোড়ায় চড়ে আসা-যাওয়া মানে ছত্রভঙ্গ তথা হানাহানি-মারামরির ইঙ্গিত বহন করে। তাই বিসর্জনের পর প্রত্যেক মণ্ডপে শান্তির জন্য আরাধনা করবেন তারা।
এদিকে, দুর্গোৎসব ঘিরে সিলেটজুড়ে থাকবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পোশাকে-সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কর্তব্য পালন করবেন বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুছা।
তিনি বলেন, র্যাব-পুলিশের সদস্যরা স্ট্যান্ডবাই ডিউটি ছাড়াও থাকবে টহল ও সিয়েরা পার্টি। বখাটেদের উৎপাত ঠেকাতে পুলিশের নারী সদস্যরাও সাধারণ পোশাকে বিচরণ করবেন।
এছাড়া মণ্ডপগুলোতে পর্যাপ্ত সেচ্ছাসেবক রাখা, আলোর ব্যবস্থার পাশাপাশি স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর ও হ্যাজাক লাইটের ব্যবস্থা রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখার জন্য বলা হয়েছে।
তারপরও কোনো ধরনের অতৎপরতা লক্ষ্য করা গেলে তাৎক্ষণিক জাতীয় হেল্পডেস্ক নম্বর ‘৯৯৯’ এ জানানোর অনুরোধ জানিয়েছেন নগর পুলিশের দায়িত্বশীলরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৯
এনইউ/আরবি/