ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মাঘ ১৪৩১, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্তদের ভিড়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৯
মণ্ডপে মণ্ডপে ভক্তদের ভিড়

ঢাকা: পূজামণ্ডপগুলোর সামনের পরিবেশটাই এখন অন্যরকম। কাছে গেলেই কানে ভেসে আসে ঢাকের শব্দ। নাক ছুঁয়ে যায় ধূপের ঘ্রাণে। আর মানুষের ভিড় ঠেলে নজরে পড়ে দুর্গতিনাশিনী দশভূজা দেবী দুর্গার শান্ত-সৌম্য মুখখানি। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ষষ্ঠী পূজার পর থেকেই মায়ের ভক্তরা ভিড় জমাতে শুরু করেন পূজামণ্ডপগুলোতে। 

শনিবার (৫ অক্টোবর) সপ্তমীতে সকাল থেকে শুরু হয় ভক্তদের মাতৃ-দর্শনের পালা। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবকে সঙ্গী করে রাজধানীবাসী ঘুরে ফিরছেন মণ্ডপে মণ্ডপে।

শনিবার সকাল থেকেই শুরু হয় সপ্তমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা। শুরুতেই বিশেষ রীতি মেনে স্নান করানো হয় মা দুর্গাকে। মা দুর্গার প্রতিবিম্ব আয়নায় ফেলে বিশেষ ধর্মীয় রীতিতে স্নান সেরে, বস্ত্র ও নানা উপচারে মায়ের পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ত্রিনয়না দেবীর তৃতীয় চক্ষুদান করা হয়। নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপন শেষে দেবীর সপ্তমী বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ছিল এবারের পূজার প্রথম অঞ্জলি। উপোস রেখে দেবীর পায়ে ফুলের অঞ্জলি দিয়ে চরণামৃত পান করে দিন শুরু করেন ভক্তরা। রাজধানীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ভিড়।  ছবি: ডিএইচ বাদলমূলত সপ্তমী থেকেই শুরু হয় শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। সকালে ধর্মীয় আচার সেরে ভক্তরা ঘুরতে ফিরতে শুরু করেন পূজামণ্ডপগুলোতে। বাদ্য-বাজনা আর ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে রাজধানীর পূজামণ্ডপগুলো।

রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রমনা কালী মন্দির ও স্বামীবাগের শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দিরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সপ্তমীতেই উৎসবের রং লেগেছে। নানা বয়সী পূজারী আর ভক্তদের ভিড় ছিল নজরে পড়ার মত। সন্ধ্যার পর এ ভিড় আরও বাড়বে বলে জানান পূজামণ্ডপের সঙ্গে সম্পৃক্তরা।

শনিবার সকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে দেখা হয়েছে রাজধানীর আরমানিটোলার বাসিন্দা সুধাংশু দেবনাথ ও তার স্ত্রী রাধিকা দেবনাথের সঙ্গে। সুধাংশু বলেন, সপ্তমীর দিন পূজামণ্ডপগুলোতে তুলনামূলকভাবে ভিড় কম থাকে। যার কারণে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়েছি। ভাবছি, ধানমন্ডি, খামারবাড়ি ও বনানীর মতো দূরের পূজামণ্ডপগুলো আজকেই ঘুরে ফেলবো। রাজধানীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ভিড়।  ছবি: ডিএইচ বাদলসুধাংশুর সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তখন কানে ভেসে এসেছে নারায়ণগঞ্জে যাওয়ার গাড়ি ঠিক করার আলাপন। লালবাগের বাসিন্দা আশীষ হালদার পরিবার নিয়ে রাতের বেলায় নারায়ণগঞ্জে পূজা দেখতে যাবেন। যা নিয়ে রেন্ট-এ কারের সঙ্গে কথা বলছিলেন।  

তিনি বলেন, প্রতিবছরই সপ্তমীর দিন নারায়ণগঞ্জ ঘুরতে যাই। আমার পরিবার, বোনের পরিবার- সবাই একসঙ্গে সারা রাত পূজা দেখে তারপর বাসায় ফিরি। এটা এখন আমাদের নিয়মে পরিণত হয়েছে।

লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণুপদ ভৌমিক বাংলানিউজকে বলেন, সপ্তমী দিন থেকেই পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ফলে এদিন থেকেই ভক্তরা ভিড় করতে শুরু করেন মণ্ডপে মণ্ডপে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সকাল থেকেই ভক্তরা এসেছেন। এখন দুপুর। এ সময়েও প্রচুর মানুষ। সন্ধ্যার পর এ ভিড় আরও বাড়বে বলেই মনে হচ্ছে।

এদিকে, প্রতিটি পূজামণ্ডপেই লক্ষ্য করা গেছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার। পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৯
ডিএন/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।