দল বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তরুণ-তরুণীরা। এছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি একসঙ্গে ৪০০ প্রতিমা দর্শনে এই আশ্রমে ভিড় করছেন ভিন্নরাও।
শুক্রবার (০৪ অক্টোবর) ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে উৎসবের শুভ সূচনা হলেও শনিবার (০৫ অক্টোবর) সপ্তমীতে ভক্ত-দর্শনার্থীর ঢল নামে আশ্রমটিতে। মন্দির প্রাঙ্গণ এবং সংলগ্ন সড়কে আলোকসজ্জা ও তোরণ নির্মাণ করায় উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। মন্দিরটির সাজসজ্জায় বৈচিত্র্য আনতে সংশ্লিষ্টরা নতুন নতুন উপকরণও ব্যবহার করেছেন। এছাড়া মণ্ডপের আশপাশে বসেছেও গ্রামীণমেলাও।
দর্শনার্থীরা জানান, এই মন্দিরের পূজার কথা অনেক আগ থেকে জেনে আসছেন তারা। খুলনা-যশোর অঞ্চলে এক মণ্ডপে এত প্রতিমা একসঙ্গে আর নেই। এ মন্দির পরিদর্শন না করলে যেন একটি অতৃপ্তি থেকে যাবে। তাই তারা এসেছেন।
তারা বলেন, মণ্ডপের প্রতিমার রঙ, বৈচিত্র্য, আলোকসজ্জা- সর্বোপরি হাজারও মানুষের ঢল- এ যেন অন্যরকম এক বিনোদনের পরিবেশ তৈরি করে।
পূজা দেখতে আসা ভক্ত সাধন পালের সঙ্গে কথা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছর এখানে বড় আয়োজনে পূজা হয়। হাজার হাজার ভক্ত আসেন পূজা দেখতে। খুব সুন্দর পরিবেশ এখানে। অনেক শান্তিপূর্ণভাবে পূজা হয়। এমন বড় নাঠ মন্দির বাংলাদেশে কোথাও নেই বলে দাবি তার।
পূজারি অরুন চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, এখানে আমি ১৫ বছর ধরে পূজা করি। খুব শান্তিপূর্ণভাবে এখানে দুর্গা মায়ের পূজা হয়।
জানা যায়, ভেরচী নিমতলা রাধাগোবিন্দ সেবাশ্রম একটি মনোরম পরিবেশে কেশবপুর ৯নং গৌরিঘোনা ইউনিয়নে, ভেরচী গ্রামের ভদ্রা নদীর কূল ঘেঁষে মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরটি তৈরি করা হয় ১৯৯৯ সালে। মন্দির পরিচালনা করেন মহাদেব কুমার পাল। মন্দিরটি চার একর জায়গার ওপর অবিস্থত। নাঠ মন্দিরটি ২৪ হাজার স্কয়ারফুট। যেখানে ১০ হাজার মানুষ ধারণ করতে পারে। পাঁচতলা উঁচু প্রবেশদ্বারের দ্বিতীয়তলায় তিনটি মন্দরি, যেখানে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়।
ভেরচী নিমতলা রাধাগোবিন্দ সেবাশ্রমের পূজা সম্পাদক বিপুল আইচ বাংলানিউজকে বলেন, খুলনার ডুমুরিয়ার চুকনাগর বাজার থেকে যশোরের নোয়াপাড়া রোডে দুই কিলোমিটার গেলেই মন্দিরটি পাওয়া যায়। যে কারণে যশোর ছাড়াও খুলনাসহ এর আশপাশের জেলা থেকে ভক্ত ও দর্শনার্থীরা জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এই আনন্দ আয়োজনে শামিল হন।
তিনি বলেন, শনিবার সপ্তমীতে সকাল থেকে শুরু হয় ভক্তদের মাতৃদর্শনের পালা। তবে সন্ধ্যার পর থেকে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবকে সঙ্গে নিয়ে হাজার হাজার মানুষ আসেন আশ্রমটিতে।
সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ গাঙ্গুলী বাংলানিউজকে বলেন, সব ভক্ত-দর্শনার্থীকে আমরা নিরাপদে পূজা দেখার ব্যবস্থা করছি। সবাইকে নিমন্ত্রণ রইলো। আমাদের এখানে চার যুগের ও বেদের বিভিন্ন কাহিনী নিয়ে প্রতিমাগুলো করা হয়েছে।
মন্দিরের সভাপতি হরেন্দ্র নাথ সরকার বাংলানিউজকে বলেন, মন্দির এলাকা সবটুকু সিসি ক্যামেরার আওতায়। আমরা সব ভক্তদের নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করছি। সব সময় পুলিশ-আনসার সদস্যরা নিয়োজিত আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৯
এমআরএম/টিএ