মরা মাছের আনুমানিক দাম ৮ কোটি টাকা। চাষের সঙ্গে জড়িত মালিক ও শ্রমিক মিলিয়ে প্রায় ৪শ’ মানুষ এখন বেকার হয়ে পড়েছেন।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে খবর পেয়ে শহরের রঘুনাথপুর ডাকাতিয়া নদীতে ছুটে যান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি ও সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাসুদুল হাসানসহ চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের একাধিক গবেষক।
মৎস্য চাষি মো. আলমগীর মিয়াজী বাংলানিউজকে বলেন, ২০০২ সালে ডাকাতিয়া নদীতে সর্বপ্রথম খাঁচায় মৎস্য চাষ শুরু হয়। এরপর এই পদ্ধতি সারাদেশে মডেল হিসেবে নেওয়া হয়। এখন চাঁদপুর শহর অঞ্চলে প্রায় ২৫০ মৎস্য চাষি রয়েছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের শেষের দিকে তাদের খাঁচায় স্বল্প সংখ্যক মাছ মরলেও গত ৩ দিন ধরে আস্তে আস্তে খাঁচায় থাকা সব মাছ মরে ভেসে উঠেছে। এসব মাছ খাওয়ার উপযোগী নয়। কীভাবে পানি দূষণ হলো তা আমরা বলতে পারছি না।
চাষি মো. তাজুল ইসলাম ও সোহেল বলেন, এই অঞ্চলের প্রত্যেক চাষির ৮ থেকে ১০টি করে খাঁচা রয়েছে। এসব খাঁচায় তেলাপিয়া, রুই, কই ও পাঙ্গাস মাছ চাষ করা হয়। ৩ দিনে পানি দূষণ হওয়ায় সব মাছ মরে ভেসে উঠেছে। আমাদের সবার বিনিয়োগ এখন পানির সঙ্গে ভেসে গেলো। চাষের সঙ্গে জড়িত সবাই এখন বেকার হওয়ার পথে।
ডাকাতিয়া নদীর পাড় এলাকার বাসিন্দারা জানান, ৩ দিন আগে থেকেই মাছ মরছে। মাছ মরার এমন ঘটনা আমরা এর আগে কখনো দেখিনি। শুধুমাত্র খাঁচার মাছ নয়, নদীর অন্যান্য মাছও মরে ভেসে উঠছে। মরা মাছের গন্ধে বাড়িতে থাকাও কষ্টকর।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পানিতে এমোনিয়ার মাত্রা বেড়ে গেছে এবং অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় মাছগুলো মরে গেছে। এছাড়াও নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ে দু’টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। দু’টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কেমিক্যাল ও ফার্নেস ওয়েল মিশ্রিত পানির প্রভাবেও মাছ মারা যেতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা ঘটনাস্থল থেকে মরা মাছ, পানি ও মাটি সংগ্রহ করেছি। মৎস্য বিজ্ঞানীরা গবেষণা করলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আনিছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে মাছ মরার কারণ বলা যাচ্ছে না। আমাদের এক্সপার্টরা পানি, মাটি ও মরা মাছগুলো পরীক্ষা করে দেখছেন। আগামী দুই দিনের মধ্যে মাছ মরার কারণ জানা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৯
আরএ