জানা যায়, সদর উপজেলার শহাবাদ ইউনিয়নের দলজিৎপুর-গারোচোরা গ্রামের পাশে চিত্রা নদী থেকে চানপুর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার একটি খাল ছিল। দীর্ঘ ৫০ বছর এ খাল খনন না করায় অধিকাংশ জায়গা দখল হয়ে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোথাও কোথাও খালের মুখ ১৫-২০ ফুট থাকলেও সেখানে গভীরতা করা হয়েছে ১৪-১৬ ফুট। আবার খালের উৎস মুখ নদীর কাছাকাছি এলাকায় খাল না কেটে কাটা হয়েছে ড্রেন। ফলে নদী থেকে খালের ভেতরে পানি প্রবেশ করতে পারে না। এদিকে, অনেক জায়গায় খাড়াভাবে খাল খনন করায় খালের দু’পাড়ের মাটি ভেঙে যাচ্ছে এবং খাল পাড়ের মানুষের বসতি ভাঙনের মুখে পড়েছে। খালের পূর্ব পাশ দিয়ে নড়াইল পৌরসভার নির্মিত পাকা সড়কের বিভিন্ন জায়গা দেবে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে চারটি বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়েছে এবং বেশ কয়েকটি খুঁটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
দলজিৎপুর গ্রামের অলেয়া বেগম (৪৫) বাংলানিউজকে বলেন, আমার তিন শতক জায়গা খালের মধ্যে চলে গেছে। এভাবে এখানে প্রায় ১৫ জনের ৩০-৩৫ শতক নিজস্ব জায়গা খালের মধ্যে চলে গেছে। এছাড়া কয়েক লাখ টাকার মূল্যবান ফলজ ও বনজ গাছ কাটা পড়েছে।
ওই গ্রামের খাল পাড়ের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক লুৎফুন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, খালের পাড় ভেঙে তার জায়গা খালের মধ্যে চলে যাচ্ছে। স্কেভেটর দিয়ে না কেটে ঝুড়ি-কোদাল ব্যবহার করে খাল খনন করলে এ সমস্যা হতো না।
গারোচোরা গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, খাল খননের পর থেকে প্রতিদিনই একটু একটু করে পাকা রাস্তা ভেঙে খালের সঙ্গে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। খালের উৎস মুখের কয়েকশ গজ সরু ড্রেনের মতো হওয়ায় জোয়ারের সময়ও নদীর পানি খালে প্রবেশ করে না। ফলে যে উদ্দেশে খাল খনন করা হয়েছে তা পূরণ হয়নি।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আঞ্জুমান আরা বাংলানিউজকে বলেন, গারোচোরা এলাকার মানুষের এ দুর্ভোগ না দেখলে বোঝা যাবে না। বিষয়টি খুব দ্রুত সমাধানের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
কিছু সমস্যার কথা স্বীকার করে এ কাজের ঠিকাদার এনামুল হক বাংলানিউজকে বলেন, প্রশাসন থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া জায়গায় খাল খননের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এলাকাবাসীর বাধার কারণে কয়েক জায়গা ঠিকমতো কাটা যায়নি।
এ বিষয়ে নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহানেওয়াজ তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ বছর পরে এ খাল পুনঃখননের উদ্যোগ নেওয়ায় অনেক জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। খালের কিছু জায়গা জুড়ে একটি সরকারি রাস্তাও করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় স্থানীয় এলাকাবাসীর বাধার সম্মুখীন হওয়ায় কাজ করতে সমস্যা হয়েছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের বাধার কারণে গারোচোরা খালের ৭০ ভাগ কাজ হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বাংলানিউজকে বলেন, পরিবেশ রক্ষা, মৎস্য চাষ, কৃষি চাষাবাদসহ সার্বিক উন্নয়নের জন্য এসব খাল পুনঃখননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গারোচোরা খালের বর্তমান সমস্যাটি দেখা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৯
এনটি