রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত এলজিআরডি ভবনে অনুষ্ঠিত এডুকেশন ওয়াচ রিপোর্ট ২০১৮-১৯’র একটি গবেষণা ফলাফল প্রকাশনা উৎসবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়নে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এ গবেষণাটি করেছে গণস্বাক্ষরতা অভিযান।
উপমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কিছু টেক্সট বই নিয়ে আমি নিজেই পরীক্ষা করে দেখেছি। সেখানে গণিতসহ বিজ্ঞান ও অন্য বিভাগের কিছু বইয়ে যে ধরনের কনটেন্টগুলো রয়েছে তা একজন শিক্ষার্থীর একার পক্ষে ৫ থেকে ৭ শতাংশের বেশি সমাধান করা সম্ভব নয়। এজন্য তাদের পুরোপুরিভাবেই শিক্ষকের ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অনেকাংশে না শিখিয়ে অনেকেই এই সুযোগ ব্যবহার করেই আলাদাভাবে শিক্ষার্থীদের পড়ানো এবং সহায়ক গ্রন্থগুলো তাদের বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু করে।
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আমাদের দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুশাসনের অভাব রয়েছে। এছাড়া কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে নানাবিধ সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যাগুলো সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরার জন্য এ ধরনের গবেষণা কার্যক্রম অত্যন্ত জরুরি। ফলে আমরা সুনির্দিষ্ট সমাধানের পথ খুঁজে পাবো এবং আশা করি সেখানে থেকে সুবিধা অর্জন হবে। একইসঙ্গে আমাদের বিদ্যালয়গুলোতে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে বর্তমানে গুণগত পরিবর্তন হচ্ছে নানাবিধ।
তিনি বলেন, আমাদের যোগ্য মানব সম্পদ আছে। আগের তুলনায় শিক্ষা এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমরা আশা করি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আমরা এই যোগ্য মানব সম্পদগুলো দিয়েই আরও উন্নত শিক্ষাক্ষেত্র গড়তে পারবো।
গণস্বাক্ষরতা অভিযান এবং ব্র্যাকের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত গবেষণা প্রকাশনা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বাস্তবায়ন বিষয়ক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে আমাদের বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকে ভুল পরিলক্ষিত হচ্ছে। পাঠ্য পুস্তকের এই ভুল, এই সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত নয়। আমরা সেটি উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। একইসঙ্গে যেটা বলা হয় যে শিক্ষার্থীর থেকে তার বইয়ের ওজন বেশি। সেটি আসলে শিক্ষক ও স্কুল অথরিটির কার্যক্রম। সরকার প্রণীত বইগুলোর ওজন খুব বেশি নয়, অতিরিক্ত বইগুলো দেওয়া হয় শিক্ষক এবং স্কুলের অথরিটির থেকে।
শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যাপারে তিনি বলেন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠানের সীমাবদ্ধতা আছে, তবে আন্তরিকতা থাকলে শিক্ষকরা আরও ভালোভাবে শিক্ষা দিতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বিভিন্ন ইস্যুতে শিক্ষকরা আন্দোলনের নামুক আমরা তা চাই না। তারা যেকোনো সময় আন্দোলনে নামলে আমাদের কষ্ট হয়। আর জাতীয়করণ করলে যেটা হয় সেটা হচ্ছে শিক্ষকরা সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে যান। কিন্তু সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা যেটি, সেখান থেকেই শিক্ষার কার্যক্রম বেশি সুন্দর ও সুষ্ঠ হয়।
আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের ভাইস চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ।
তিনি বলেন, আমরা দেশে বর্তমানে দক্ষ, যোগ্য ও আদর্শ শিক্ষক পাচ্ছি না। পেলেও সেই দু’একজনকে প্রয়োজনমতো সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে না। আর যেটা বলা হয় যে অন্যান্য দেশে শিক্ষকতা আকর্ষণীয় নয়, সে বিষয়টি আসলে সত্য নয়। এটি শুধুমাত্র কয়েকটি দেশেই সীমাবদ্ধ। আমাদের দেশে বিপুল জনগোষ্ঠী শিক্ষকতার প্রতি আগ্রহী।
‘বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়নে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভূমিকা’ বিষয়ক প্রবন্ধের প্রকাশনা উৎসবের সঞ্চালনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী।
এ সময় অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট জনেরা এবং বিভিন্ন শিক্ষা সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৯
এইচএমএস/এএটি