ঢাকা, রবিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

কাউন্সিলরদের দুর্নীতি ব্যক্তিগত, দায়িত্বে নেই: মন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৯
কাউন্সিলরদের দুর্নীতি ব্যক্তিগত, দায়িত্বে নেই: মন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম

ঢাকা: ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেফতার ঢাকা সিটির কাউন্সিলরদের দায়িত্বে দুর্নীতির তেমন খবর পাওয়া না গেলেও ক্যাসিনো খেলা এবং ঠিকাদারিসহ ব্যক্তিগত কাজে দুর্নীতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

রোববার (৩ নভেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
 
সম্প্রতি কয়েকজন কাউন্সিলরকে গ্রেফতারের প্রসঙ্গ নিয়ে তারা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে গেলো কেন- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আসলে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে দেখার স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রীর।

এজন্য একটা লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছেন তিনি। দুর্নীতি উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিবন্ধকতা। স্বাভাবিকভাবেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এটা আমাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিলে। সে অঙ্গীকার অনুযায়ী দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। এটা সব সময় চলমান ছিল। কিন্তু এখন হয়তো এটা দৃশ্যমান একটু বেশি হচ্ছে।
 
‘আমার মনে হয় দলের শুধু ওয়ার্ড কমিশনার নয়, অন্য পদাসীনদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। দুর্নীতির সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন পর্যায়ক্রমে কাউকেই ক্ষমা করা হবে না। ’
 
মন্ত্রণালয় বা সিটি করপোরেশনের তদারকির অভাব ছিল কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আসলে সিটি করপোরেশনে তাদের যে দায়িত্ব, সে দায়িত্বের মধ্যে তো তারা অপরাধ করেছে বলে… যে সমস্ত খবরা-খবর পাই তাদের দায়িত্বের মধ্যে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় সেগুলোতে তেমন বেশি কিছু মনে হয় না।
 
‘আমরা পাচ্ছি বিভিন্ন ঠিকাদারি, অন্যখানে তারা কাজ করছেন ব্যক্তি হিসেবে এবং ক্যাসিনোর একটা কথা আসছে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ক্যাসিনোর ব্যবসার সুযোগ নেই এবং অবৈধভাবে তারা সেটা করেছেন। এস্ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে এবং দুদক মনে করছে তাদের আয় প্রদর্শিত আয় নয়। সেগুলো নিয়ে আইন আছে, সে অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিটি করপোরেশনে যে দায়িত্বগুলো তাদের উপর বণ্টন করা ছিল, সে দায়িত্বগুলোর মধ্যে দুর্নীতির তেমন তথ্য খুব বেশি একটা প্রকাশিত হয়নি। ’
 
কাউন্সিলরা গ্রেফতার হলে কাজের ক্ষতি হবে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্র একটি ব্যবস্থাপনার ওপর প্রতিষ্ঠিত। সেখানে এক ব্যক্তির অবর্তমানে সে ব্যবস্থাপনায়ই কাজগুলো সম্পন্ন হবে। সব জায়গায় বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে। সিটি করপোরেশন যে ম্যানেজমেন্টের ওপর প্রতিষ্ঠিত সে অনুযায়ী কাজ চলছে। আমার মনে হয় এজন্য কোথাও কাজের গতি শ্লথ হবে না।
 
কাউন্সিলরদের জবাবদিহিতা ও সম্পদের হিসাব মন্ত্রণালয়ে দেওয়া উচিত ছিল কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি নাগরিকের সম্পদের হিসাব দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রের একটি ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠিত। রাষ্ট্র বিভিন্ন সময় নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে সম্পদের হিসাব নেন, সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখেন, তাদের ব্যাপারেও দেখছেন। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে সেটা তাৎক্ষণিক দেখা হচ্ছে।
 
যথাসময়ে নির্বাচন
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন যথাসময়ে হওয়ার জন্য আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নিরবাচন নিয়ে তিনি বলেন, ওই নির্বাচনও যথা সময়ে করার জন্য আমাদের সিদ্ধান্ত রয়েছে। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়।
 
ঢাকার দুই সিটিতে ইভিএমে ভোট হলে ফলাফলে প্রভাব পড়বে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ইভিএম পদ্ধতিতে নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশন অনেক আগ থেকেই চেষ্টা করছে। সক্ষমতা অর্জন করা সাপেক্ষে তারা সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ করার কোনো কারণ নেই। এটা তারাই দেখবে।
 
এর আগে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এর সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রী। এসময় স্থানীয় সরকার সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

চীনা রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা ইস্যুতে কিছু বলেছেন কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা চায় যে মিয়ানমারের সঙ্গে এ বিষয়টা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হোক।
 
বাংলাদেশ-চীনের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন ৩৫টি প্রকল্পে চীন সরকার সময়মতো অর্থছাড় না দেওয়ার কারণে অনেক প্রকল্প আটকে আছে বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মন্ত্রাণলয়ের যে প্রকল্পগুলো পেনডিং রয়েছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। এগুলো তারা দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তি করার অঙ্গীকার করেছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৯
এমআইএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।