রোববার (০৩ নভেম্বর) বিকেলে মুন্সীবাড়ি এলাকার এইচ এম ম্যানশন ভবনটি ধসে পড়ে। ভবনটির মালিক মৃত আব্দুর রউফ মিয়ার ৪ সন্তান।
প্রতিদিন বিকেল ৩টায় আরবী পড়তে বের হয় শোয়েব (১২)। প্রতিদিনের মতই রোববার বিকেলে আরবী পড়তে বের হয়। কিন্তু যে বাড়িতে সে আরবী পড়তে গিয়েছিল সে বাড়িটি হঠাৎ করে উল্টে একপাশে খালের উপর পড়ে যায়। সেখানেই মারা যায় সে। শেষ হয়ে যায় মায়ের একটি স্বপ্ন।
নিহত শোয়েব উত্তর গোয়ালবন্দ এলাকার মৃত শাহাবউদ্দিনের ছেলে। সে সেখানকার সানরাইজ মডেল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।
শোয়েবের মা রোজিয়া জানান, শাহাবউদ্দিন সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন। সেখানে তিনি ব্যবসা করতেন। দুই বছর আগে সেখানেই তিনি মারা যান। তাদের আরেক মেয়ে আছে। তার বিয়ে হয়ে গেছে। সে কারণে ছেলে শোয়েবকে নিয়ে একাই বাসায় থাকতেন রোজিয়া।
তিনি আরো জানান, প্রতিদিন বিকেল ৩টায় বাসা থেকে বের হয়ে বাবুরাইলের ওই বাড়িতে পড়তে যেতেন শোয়েব। সে ভবনের নিচ তলায় সোনিয়া নামের এক নারীর কাছে আরবী শিখতেন। ফিরতেন বিকেল সাড়ে ৪টায়। কিন্তু রোববার বিকেল সোয়া ৪টায় খবর পান ভবন ধসের। পরে তার সন্তান ফেরে লাশ হয়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজহারউদ্দিনের এক মামাতো বোনের বিয়ে থাকার কারণে সবাই সেখানে চলে যান। ফলে পুরো ভবন ছিল মূলত ফাঁকা। তবে নিচ তলার ভাড়াটিয়া সোনিয়া বাসাতেই ছিল, আর বাসায় ৬ষ্ঠ শ্রেণীর স্কুলছাত্র সোয়াইন হোসেন শোয়েব, ওয়াজিদ, স্বপ্নাসহ কয়েকজন বিকেলে আরবি পড়তে এসেছিল। আরবী পড়ার সময় হঠাৎই ভবনটি ধসে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, ভবনটি মূলত একটি ডোবার উপর নির্মাণ করা হয়েছিল। সেখানকার মানুষরাও এ ব্যাপারে অনেকবার নিষেধ করেছিলেন। ভবনটি কোনো সয়েল টেস্ট কিংবা রাজউকের অনুমতি ছাড়াই নাকি পাইলিং ছাড়া নির্মাণ করা হয়েছিল। ছিলনা কোনো ফাউন্ডেশনও। ভবনটি তিন তলা পর্যন্ত করার পরও লোড নিতে পারছিল না, কিন্তু সম্প্রতি ভবনটির চারতলার ছাদ ঢালাই দেয়া হয়। আর এ লোড নিতে না পেরে রোববার ধসে পড়ে ভবনটি।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৯
এসএইচ