সোমবার (২৫ নভেম্বর) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক আইনের বিষয়টি নিয়ে সমস্যা সমাধানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছি।
তিনি বলেন, আইন প্রয়োগে যতটা সহনীয়ভাবে দেখা যায়, দেখবো। যখন অচলাবস্থা হয়, তখন মিডিয়াও বলে ভোগান্তি হচ্ছে। সব বন্ধ হলে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। বাস্তবতার নিরিখে রয়ে-সয়ে চলতে হবে। কারণ, বাস্তবতা ভিন্ন। আইনের বিধি হয়ে গেলে অনেক কিছু সমাধান হবে। সবার আলোচনার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত তো চাপিয়ে দেওয়া হয়নি, সবার সঙ্গে আলোচনা করে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে ট্রাক, লরি, কাভার্ডভ্যান যখন বন্ধ হয়, তখন তো অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। পণ্য সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এখন আমি ‘অ্যাগ্রেসিভ মুড’ নিলাম, কিন্তু এর বাস্তবতা তো ভিন্ন। কাজেই আইনটাও যেন থাকে, একই সঙ্গে এর প্রয়োগ যতটা সম্ভব সহনীয় পর্যায়ে রাখা। বিধিমালা হচ্ছে। এটি হয়ে গেলে এটার আরও অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে। আশা করি, সমস্যা হবে না।
সরকার পরিবহন নেতাদের জন্য পিছু হটলো কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পিছু হটার বিষয় নেই। যা বাস্তব, দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী যে বিষয় নিয়ে আমাদের অবস্থান নেওয়া দরকার, আইনি ব্যবস্থা রেখে জনস্বার্থে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশে তো ধর্মঘট নেই, আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে পারি তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে। কিন্তু তাতে যা হবে ও তা কি বাস্তবসম্মত হতো? পরিবহন নেতাদের সিদ্ধান্তের বাইরেও ধর্মঘট হয়েছে, এখানে নানা মেরুকরণ হয়েছে।
সরকার পরিবহন নেতাদের কাছে জিম্মি কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, কেউ কারও কাছে জিম্মি নয়। দু’দিনের অবস্থা বিচার করে দেখেন। মিডিয়া বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচকভাবে আইনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে এক সপ্তাহ অচলাবস্থা হলে মিডিয়ার সুর পাল্টে যাবে। প্রথম দুই-তিনদিন আপনারা আইনের পক্ষে থাকবেন। পণ্য সরবহরাহ বন্ধ হলে কী হবে?
লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন বিলম্ব হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিআরটিএ’তে এ বিষয়ে দ্রুত কাজ হবে। জনবল বাড়ানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুত জনবল সংকট সমাধান হবে। চালক তৈরির জন্য বিরাট প্রকল্প রয়েছে, বিআরটিসি ও বিআরটিএ উদ্যোগ নিয়েছে। দক্ষ চালক সৃষ্টিতে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।
এসময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জন্যই নতুন সড়ক আইন হয়নি বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
আইন বাস্তবায়নে পিছু হটায় জনমনে কোনো প্রভাব পড়বে কি-না এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আইন পরির্তন কোথায় হলো? জাতীয় সংসদে আইনটি পাশ হয়েছে। পরিবর্তন করতে হলে সংসদেই আবার নিয়ে যেতে হবে। তারা (পরিবহন সংশ্লিষ্টরা) যেটা দাবি করেছে, সেটা আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি। আইন তো আর কোরআন-বাইবেল নয় যে এটা কোনো সংশোধনের সুযোগ নেই। যদি যাচাই-বাছাই করে সংশোধনের মতো বাস্তব যুক্তিসঙ্গত, ন্যায়সঙ্গত কোনো বিষয় থাকে, সেটা অবশ্যই বিবেচনা করা হবে। কিন্তু, যাচাই-বাছাই করার আগে তাদের দাবি নিয়ে আমি এখন হুট করে কোনো মন্তব্য করতে পারি না।
আইন মেনে না চলার প্রবণতার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি এখন আইন মেনে চলার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। একটা ভয়-ভীতি কাজ করছে। যে যাই বলুক, আইনের প্রয়োগ বন্ধ করা হয়নি। কিছু কিছু বিষয়ে বাস্তবতার স্বার্থে শৈথিল্য দেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুন> অনুমতি ছাড়া বিএনপির সভা-সমাবেশের ঘোষণা হাস্যকর: কাদের
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৯
জিসিজি/একে