তবে এবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নয়, বসবাসের জন্যই সংস্কার কাজ চলছে। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশান ২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়ির ওই রেস্তোরাঁয় হামলা চালায় জঙ্গিরা।
আর জঙ্গি হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই পুলিশ সদস্য নিহত হন। আর ২ জুলাই সকালে কমান্ডো অভিযানে হামলাকারীদের ৫ জন নিহত হয়।
পরে ঘটনাস্থল থেকে আরও একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়; যাকে রেস্তোরাঁর কর্মচারী হিসেবে শনাক্ত করা হয়। হামলাকারীদের মধ্যে অনেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষিত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিল।
পরে এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে। বুধবার (২৭ নভেম্বর) আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন আদালত।
হামলার পর পরিত্যক্ত হয়ে যায় হলি আর্টিজান বেকারির ভবনটি। এরপর দীর্ঘদিন বাড়িটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকার পর মালিককে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই মূলত সংস্কারের কাজে হাত দেন বাড়ির মালিক সাদাত মেহেদী।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই বাড়িতে সংস্কারের কাজ চলছে। সেখানে দেখা হয় বাড়ির নিরাপত্তা প্রহরী মোহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে। তবে বাড়ির ভেতরে যেতে দেননি তিনি।
মোহাম্মদ হোসেন জানালেন, বাড়ির মালিকের থাকার জন্য সংস্কার কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে মালিক সপরিবারে থাকবেন। এখনও ৫-৬ জন শ্রমিক বাড়িতে থেকে কাজ করছেন।
তবে বাড়ির মূল ফটকে দাঁড়িয়ে দেখা গেছে, বাড়ির বাইরের অংশের সংস্কার কাজ প্রায় সম্পন্ন। এখন চলছে ভেতরের সংস্কার কাজ।
নিরাপত্তা কর্মী হোসেন বলেন, স্যার, ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এখানে খুব একটা আসেন না। পরিবার নিয়ে তিনি বনানীর ফ্ল্যাটে থাকেন। তবে বাড়ির কাজ শেষ হলে এখানে নিয়মিত থাকবেন বলে আমরা শুনেছি।
ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে মালিকের নিষেধ আছে বলেও জানান তিনি।
গুলশান ২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়িটির একটি অংশে হলি আর্টিজান বেকারি ছিল। আর অপর অংশ ছিল লেকভিউ ক্লিনিক। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং নম্বরে মালিকের নাম লেখা সামিরা আহমেদ ও সারা আহমেদ। সামিরা আহমেদের স্বামী সাদাত মেহেদী
জানা গেছে, আবাসিক ভবন কাম-ক্লিনিক গড়ার জন্য ডা. সুরাইয়া জাবিনকে ১৯৭৯ সালে বাড়িটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। ডা. সুরাইয়ার মৃত্যুর পর মালিক হন তার দুই মেয়ে সামিরা আহমেদ ও সারা আহমেদ।
একপাশে ক্লিনিক গড়ে তোলা হলেও অপরপাশের আবাসিক ভবনে ২০১৪ সালে এক বন্ধুর সঙ্গে মিলে হলি আর্টিজান বেকারি দেন সামিরার স্বামী সাদাত মেহেদী।
ক্লিনিকটি এখনও চালু থাকলেও জঙ্গি হামলার পর আরও চালু হয়নি হলি আর্টিজান বেকারি। আংশিকভাবে হলি আর্টিজান বেকারি চালু করা হয় গুলশান অ্যাভিনিউয়ের র্যাংস আর্কেড প্লাজার দ্বিতীয় তলায়।
সেখানে গিয়ে দেখা যায়, রেস্তোরাঁটি চালু রয়েছে। এক সঙ্গে ২০ জনের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানেও ভিড় জমান আগের গ্রাহকেরা। আটজন কর্মীর ৫ জনই আগের হলি আর্টিজান বেকারিতে কাজ করতেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৯
এসই/এমএ