বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্মেলনকক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা জানান।
মো. মফিদুর রহমান বলেন, আগামী ২৮ ডিসেম্বর শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরু হবে।
তিনি বলেন, আগামী চার বছরে এই টার্মিনালের কাজ সম্পন্ন হবে। এটি চালু হলে নতুন করে ১২ মিলিয়ন যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। ফলে নতুন-পুরাতনসহ সবমিলিয়ে মোট ২০ মিলিয়ন যাত্রীকে বছরে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
‘প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প তৃতীয় টার্মিনাল’
সংবাদ সম্মেলনে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ উপকরণের মান নিয়ে আমরা কোনো আপস করিনি। অনেক ঠিকাদার চেয়েছিল নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ম্যানেজ করার। কিন্তু আমরা সেই সুযোগ দেইনি। জাইকার চাওয়া অনুযায়ী, উন্নত দেশের এয়ারপোর্টে যেসব উপকরণ লাগানো হয়েছে। সেই উপকরণ এখানেও লাগানো হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশই চায় বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনা করতে। কিন্তু আমরা দিতে পারছি না। যেহেতু প্রতিবছরই যাত্রী বাড়ছে তাই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালু হওয়ার আগ পর্যন্ত সিলেট ও চট্টগ্রাম থেকে কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। তবে কক্সবাজার বিমানবন্দর চালু হলে চাপ অনেকটা কমবে।
মফিদুর রহমান বলেন, আমাদের ক্যাটাগরি মাঝখানে খারাপ হয়েছিল, সরকার দিকনির্দেশনা দেওয়ায় আমরা কাজ করে ক্যাটাগরিতে উন্নতি করেছি। লন্ডন ফ্লাইট চালুর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আমেরিকায় ফ্লাইট চালুর ব্যাপারে চেষ্টা চলছে। সে দেশের একটি টিম আসবে আগামী সপ্তাহে। তারা এলে অ্যাসেসমেন্ট দেবে, তারপর একটা সিদ্ধান্ত আসবে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে টরেন্টো ফ্লাইট চালুর লক্ষ্যে কাজ করছি। এটা প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন। আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন ক্যাটাগরিতে দ্রুত উন্নতি করায় প্রশংসা করেছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের অনিয়ম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিমানবন্দর নির্মাণে অনিয়ম হয় না এটা বলবো না, আমরা এ ব্যাপারে সজাগ আছি। আপনারা গণমাধ্যমকর্মীরাও আছেন, সহযোগিতা করবেন। পরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, কেউ দায়বদ্ধতার বাইরে নয়, কক্সবাজার নিয়ে মন্ত্রণালয়ের তদন্ত হয়েছে, এখন বিভাগীয় তদন্ত চলছে। তাই সরাসরি এখন বলা যাবে না কে দায়ী। সরকারি কাজে কেউ বাধা দিয়ে রাখতে পারবে না। জেলা প্রশাসক কাজ করছেন। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে বিচার শেষ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বিচার চলছে। শেষ হলে বোঝা যাবে কে দোষী, তখন অবশ্যই বিচার করা হবে।
মফিদুর রহমান বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল হবে পুরোপুরি অটোমেটিক। সব সংস্থাকে প্রবেশ দেওয়া হবে। সেখানে নির্ধারিত স্থানে দায়িত্ব থাকবে, ট্যানেল থাকবে। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং উন্নত হবে। সেটা আমাদের সরকারের স্বপ্নের প্রকল্প।
তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির প্রতি শতভাগ সমর্থন রয়েছে আমাদের। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সিভিল এভিয়েশনে কাজ করছি। তাদের মধ্যে নৈতিকতা বোধ জাগ্রত করতে হবে। সিভিল এভিয়েশনে দুর্নীতি করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ডোন নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। অনুমতি নিয়ে সেটা পরিচালনা করতে হবে। কেউ চাইলে অনলাইনে চাহিদা দিতে পারবেন, কোথায় পরিচালনা করবেন। সব সংস্থার অনুমতি নিয়ে ড্রোন পরিচালনা করা যাবে।
পদ্মার আশপাশে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করার জন্য দু’টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান বেবিচক চেয়ারম্যান। সময়মতো তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বেবিচকের সদস্য (প্রশাসন) হাফিজুর রহমান, সদস্য (অর্থ) মিজানুর রহমান, সদস্য (নিরাপত্তা) শহীদুজ্জামান ফারুকী, সদস্য (পরিকল্পনা ও পরিচালনা) এয়ার কমোডর খালিদ হোসেন, সদস্য (এটিএম) গ্রুপ ক্যাপ্টেন আবু সাঈদ মেহবুব খান, সদস্য (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড ও রেগুলেশন) গ্রুপ ক্যাপ্টেন জিয়াউল কবির, প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোম্বামী, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক তৌহিদ উল আহসান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন>>>শাহজালালের ৩য় টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ২৮ ডিসেম্বর
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯
টিএম/এসএ