ঢাকা, সোমবার, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে তৎপর হতে হবে

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে তৎপর হতে হবে

ঢাকা: একাত্তরে বিশ্বের বিভিন্ন পরাশক্তি পাকিস্তানের পক্ষালম্বন করলেও সেসব দেশের গণমাধ্যম পাকিস্তানি গণহত্যার সংবাদ ও ছবি প্রকাশ করে এই গণহত্যার ঐতিহাসিক প্রমাণ নিশ্চিত করেছে। তবে এখন পর্যন্ত পাকিস্তান ও এর সুবিধাভোগী চক্র নানাভাবে গণহত্যার ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এজন্য যেমন একাত্তরের বর্বর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে আমাদের তৎপর হতে হবে, ঠিক তেমনি গণহত্যা অস্বীকারকে ‘অপরাধ আইন’ এর আওতায় আনতে হবে।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত একক বক্তৃতায় এমন কথা বলেন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট লেখক শাহরিয়ার কবির। একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনারকক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

'বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যার কারণ এবং গণহত্যাকারীদের বিচার' শীর্ষক এ বক্তৃতায় শাহরিয়ার কবির বলেন, একাত্তরে বুদ্ধিজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে যে নৃশংসতায় হত্যা করা হয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে তার তুলনা মেলা কঠিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও ভয়াবহ গণহত্যা হয়েছে, তবে তা ছিল ছয় বছরব্যাপী একাধিক মহাদেশে চলমান যুদ্ধে পরিচালিত গণহত্যা।  

‘বাংলাদেশে নয় মাসে মাত্র ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল এলাকাজুড়ে যে গণহত্যা চালানো হয়েছে তা নজিরবিহীন। অতিসম্প্রতি আমরা জাতীয় গণহত্যা দিবস পালন শুরু করলেও একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে এখনও সক্ষম হইনি। এ বিষয়ে আমাদের আরো তৎপর হতে হবে। ’

স্বাগত বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বাংলা একাডেমির সঙ্গে একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ছিল নিবিড় সম্পর্ক। তাদের প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবেই একাডেমির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বাংলা একাডেমি শহীদ বুদ্ধজীবীদের স্মৃতিকে অমর করে রাখতে প্রকাশ করেছে শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষগ্রন্থ, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মারকগ্রন্থ, নবপর্যায়ে পুনর্বিন্যস্ত চারটি খণ্ডে 'স্মৃতি: ১৯৭১' এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রচনাসমগ্র। আমাদের স্মৃতিতে শহীদ বুদ্ধিজীবীরা চিরজাগ্রত থাকবেন তাদের অগ্রবর্তী চিন্তা ও সাহসী কর্মে।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হলেও একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যা শুরু হয় সে বছর মার্চে। ডিসেম্বরে তা তীব্র আকার ধারণ করে; নির্মম নৃশংসতায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়। দেশের জন্য একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ কখনই বিস্মৃত হওয়ার নয়।

এর আগে আয়োজনের শুরুতে একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আবৃত্তিশিল্পী সৈয়দ হাসান ইমামের কণ্ঠে পাঠ হয় কবি আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও আবুল হাসানের মুক্তিযুদ্ধের কবিতা।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।