ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বন্ধুকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার ৩ কিশোর জেলহাজতে 

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
বন্ধুকে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার ৩ কিশোর জেলহাজতে 

ঈশ্বরদী (পাবনা): মেরে ফেললে আর পাওনা টাকা দিতে হবে না এ চিন্তা করে ‘ক্রাইম পেট্রোল’ স্টাইলে আরাফাত মল্লিক (১২)  নামে এক ছাত্রকে হত্যাচেষ্টার অপরাধে ঈশ্বরদী উপজেলায় তিন কিশোর অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

বর্তমানে আরাফাত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।         

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১টায় গ্রেফতার কিশোর অপরাধীদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।

 

আহত স্কুলছাত্র ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের গড়গড়ি গ্রামের আকমল মল্লিকের ছেলে। এবং স্হানীয়  সানফ্লাওয়ার কিন্ডার গার্টেনের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।              

গ্রেফতার কিশোর অপরাধীরা হলো-ঈশ্বরদীর
সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গ্রামের চর- গড়গড়ি মুচির বটতলা এলাকার রবি মোল্লার ছেলে রাফি (১৪) আব্দুল কাদের মালের ছেলে রামিম (১২) ও শাহ আলমের ছেলে প্রিন্স (১৩)  

মামলার বাদী আহত আরাফাতের চাচা আবু তাহের মল্লিক ঈশ্বরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার ভাতিজা আরাফাত, ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের গড়গড়ি সানফ্লাওয়ার কিন্ডার গার্টেনে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। গত ১৫ ডিসেম্বর সকাল ৮টার দিকে সহপাঠী বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে কাচারীপাড়া আমবাগানে যায়। দুপুরে খাওয়ার  সময় পেরিয়ে গেলেও আরাফাত ফিরে না আসায় আমার ভাই আকমলসহ আরও লোকজন তাকে খোঁজাখুজি করতে থাকি।  

খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি সে তার সহপাঠী বন্ধু  রাফি, রামিম প্রিন্সসহ আরও বন্ধুদের সঙ্গে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খেলা করেছে। তারপর সে কোথায় গিয়েছে কেউ বলতে পারে না। অতঃপর তার ওই বন্ধুদের কাছে গিয়ে আরাফাতের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা সঠিক তথ্য না দিয়ে বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যায়। সন্ধ্যার পরেও বাড়ি ফিরে না এলে আমরা তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করি। এবং ঈশ্বরদী থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করি। খবর পেয়ে  ঈশ্বরদী থানা পুলিশ চর গড়গড়ি এলাকায় এসে রাফি, রামিম ও প্রিন্সকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।  

একপর্যায়ে রামিম, প্রিন্সদের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ ১৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাত সোয়া ১টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চর-গড়গড়ি  গ্রামের হবি মালিথার আখ ক্ষেত থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় আরাফাতকে উদ্ধার করে পুলিশ।  

পরে দ্রুত তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠালে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বর্তমাসে আরাফাত সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।    


ঈশ্বরদী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অসীত কুমার বসাক বাংলানিউজকে জানান, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রাফি, রামিম, প্রিন্স স্বীকারোক্তি দিয়েছে। রাফির কাছে স্কেটিং জুতা বিক্রয়ের আড়াই হাজার টাকা পেত আরাফাত। এ পাওনা টাকার বিষয়কে কেন্দ্র করে আরাফাতের উপর ক্ষিপ্ত ছিল রাফি। রাফি চিন্তা করে আরাফাতকে মেরে ফেললে আর টাকা দিতে হবে না। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী  আরাফাতকে হত্যার উদ্দেশে রাফি, রামিম ও প্রিন্স আখ খাওয়ার কথা বলে ১৫ ডিসেম্বর দুপুর ১টার সময় ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের চর- গড়গড়ি গ্রামের হবি মালিথার আখ ক্ষেতে নিয়ে যায়। তারা একসঙ্গে আখ খায়। একপর্যায়ে রাফির হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আরাফাতকে হত্যার উদ্দেশে মাথায় এবং বাম কানে পরপর কয়েকটি আঘাত করে । এসময় তারা মৃত ভেবে আরাফাতকে ফেলে রেখে যায়।  

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী বাংলানিউজকে জানান, ঈশ্বরদী থানায় একটি হত্যা মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। দুপুরে গ্রেফতার তিন কিশোর অপরাধীকে আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।  

** ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে শিশুকে হত্যাচেষ্টা সহপাঠীদের!       

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।