ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার নাম কষ্টের: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার নাম কষ্টের: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: রাজাকারদের তালিকায় যোদ্ধাদের নাম আসায় ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কষ্টের বিষয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিভাবে রাজাকারদের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম চলে এলো এটা রহস্যজনক। এ তালিকা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে।

যাদের পরিবাররের সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে, তাদের যদি রাজাকার শব্দটি শুনতে এটি তাদের জন্য খুবই কষ্টের বিষয়।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় দেওয়া সূচনা বক্তব্যে এ সব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীকে বলেছিলাম তালিকাগুলো ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে প্রকাশ করার জন্য। এত তাড়াতাড়ি এটি প্রকাশ করার কথা না, তাও আবার বিজয় দিবসের আগে। আমরা সুন্দরভাবে বিজয় দিবস উদযাপন করলাম। তালিকা সময় নিয়ে প্রকাশ করা দরকার ছিলো। সব মিলিয়ে একটি গোলমাল তৈরি হয়েছে। ৭২ সালে যুদ্ধের সময় আমাদের আওয়ামী লীগের যারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলো তাদের অনেককে পাকিস্তান সরকার দুর্বৃত্ত, সন্ত্রাসী বলে মামলা দিয়েছিলো।

শেখ হাসিনা বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। যারা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার তার এটা নিয়ে দুঃখ পেয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন। মনে কষ্ট লাগবে এটা খুবই স্বাভাবিক। যাহোক মন খারাপ করার কিছু নেই। সবকছিু ঠিক করা হবে। এটা যাচাই-বাছাই করা হবে। মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সবসময়ই তাদের কাছে শ্রদ্ধেয়, দেশের মানুষের কাছেও শ্রদ্ধেয়। এর জন্য যারা দোষী তাদের ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা আমরা ঠিক করে ফেলবো।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন তাদের সন্ত্রাসী বানিয়ে পাকিস্তান সরকার মামলা দিয়েছিলো। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ওই তালিকা ধরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে। এরশাদের সময়ও ওই তালিকা ব্যবহার করা হয়েছে। এক সময় তালিকায় কিশোরগঞ্জের এক নম্বর সন্ত্রাসী হিসেবে জিল্লুর রহমান সাহেবের (প্রয়াত রাষ্ট্রপতি) নাম আসে। তখন খোঁজ নিয়ে দেখা গেলো পাকিস্তানের সময় করা তালিকা থেকে করা হয়েছে। রাজাকার-আলবদর-আলশামসের তালিকার গ্রেজেট আছে। পত্রিকাতে তাদের নামের তালিকা আছে। আমরা যখন ট্রাইব্যুনাল করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করি, তখন এই গ্রেজেট থেকে নাম নেওয়া হয়। এখানে রাজাকারদের তালিকা করতে গিয়ে যাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার মামলা করেছি, এ তালিকা জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়াও ব্যবহার করেছে সেই তালিকা ঢুকে গেছে। এটা কিভাবে ঢুকে গেলো সেটা রহস্যজনক। এটা রাজাকারের তালিকা না। রাজাকারের তালিকায় কোনো মুক্তিযোদ্ধার নাম থাকা এটা হতে পারে না। এর থেকে দুঃখের কষ্টের আর কিছু হতে পারে না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সরকারে গিয়ে আমরা কি করবো, সেটা আমরা দল থেকে আগে ঠিক করি। অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের কমিটি আছে। তারা বসে পরিকল্পনা গ্রহণ করে। আমরা সরকার থেকে সেটা বাস্তবায়ন করি। আমরা মাঠে ঘুরে মানুষের অবস্থা উপলদ্ধি করি, বঙ্গবন্ধু এটা করতেন। এটা আমরা উপলদ্ধি করি বলেই দেশের জন্য মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি। দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে এ উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকবে এটা আমি বিশ্বাস করি। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাবে। আমরা উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ গড়তে পারবো এ বিশ্বাস আমার আছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯
এসকে/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।