ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘উত্তরা বাতাসে’ বাড়ছে শীত, কাঁপছে রাজধানী

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
‘উত্তরা বাতাসে’ বাড়ছে শীত, কাঁপছে রাজধানী

ঢাকা: পৌষ এলেও নেই সে রোদমাখা দিন। তার সঙ্গে বয়ে চলছে ‘উত্তরা বাতাস’। কনকনে হিম বয়ে আনা বাতাসে উঠছে হাড় কাঁপুনি। আর শীত সবচেয়ে বেশি পড়ছে রাজধানীতে। ঢাকাবাসী দিনেও মোটা কাপড় ছাড়া বের হতে পারছেন না।

হঠাৎ চলে আসা এই ঠাণ্ডা ‍অনুভূতিতে মানিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নগরবাসীকে। পাবলিক বাস বা কার ব্যতীত অন্য কোনো পরিবহনের যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে বিপাকে।

বাইকাররা পুরো শরীর মুড়িয়েও রক্ষা পাচ্ছেন না ঠাণ্ডা থেকে। খবর আসছে, হঠাৎ করে ঠাণ্ডার এ আক্রমণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছেন নানা রোগে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ার কারণে ঠাণ্ডার অনুভূতি বাড়ে। বর্তমানে রাজধানীতে রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য প্রায় অর্ধেক কমে এসেছে। তারপরও রয়েছে ‘উত্তরা বাতাস’। ফলে মড়ার ওপর খাড়ার ঘা’র অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর তাপমাত্রা কমবে। ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসবে ব্যারোমিটারের পারদ। দিনের তাপমাত্রা এখন ২০ ডিগ্রি সেলিসিয়াসে আছে। এটা আরো নিচে নেমে এলে রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য আরও কমে যাবে। ফলে ঠাণ্ডার অনুভূতি আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসছে বাতাস, যেটাকে আমরা ‘উত্তরা বাতাস’ বলে থাকি। ঢাকায় বর্তমানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার। এই বাতাস কনকনে হিম বয়ে এনে হাড় কাঁপুনির সৃষ্টি করেছে। এই বাতাস না থাকলে দিনের তাপমাত্রা এতো কমতো না। আর এতো ঠাণ্ডাও অনুভূত হতো না। ৯-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে এতো ঠাণ্ডা অনুভূত হয়না, যদি রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য বেশি থাকে।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের মধ্যে রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য সবচেয়ে কম ছিল ঢাকায়। এখানে ওই সময়ে দিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০ ডিগ্রি সেলসিয়ার। আর রাতের তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তেঁতুলিয়াতে সর্বনিন্ম তাপামাত্রা রেকর্ড করা হলেও ঢাকার চেয়ে বেশি ছিল রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য। তাই রাজধানীবাসীকেই বর্তমানে সবচেয়ে বেশি কষ্ট করতে হচ্ছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রাজধানীতে সূর্যের দেখা মিলছে না বললেই চলে। এমন অবস্থা দু’দিন থাকার পর সূর্যকিরণ আবার আগের মতো পাওয়া যাবে। স্থান ভেদে ২১ ও ২২ ডিসেম্বরের দিকে ঠাণ্ডা অনুভূতি কমে আসবে। এরপর আসতে পারে নিম্নচাপ। এক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ মাঝারী (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা) ধরণের শৈত্যপ্রবাহের মধ্য দিয়ে যেতে হতে পারে দেশবাসীকে।

উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বর্তমানে হিমালয়ের পাদদেশিয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আর মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ অবস্থান করছে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে। তাই বৃহস্পতিবারও (১৯ ডিসেম্বর) অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। আর মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে মাঝারী ধরণের ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারী ধরণের কুয়াশা পড়তে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০২০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
ইইউডি/এমকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।