ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বেড়েছে শীতের প্রকোপ, ভোগান্তিতে নিম্ন আয়ের মানুষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৯
বেড়েছে শীতের প্রকোপ, ভোগান্তিতে নিম্ন আয়ের মানুষ

পঞ্চগড়: চলতি মৌসুমে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে শৈত্যপ্রবাহের দাপট দিন দিন বেড়েই চলেছে, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীত ও ঘন কুয়াশা। গত কয়েকদিন ধরে মৃদু থেকে শীতল বাতাসের  প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে এ জেলায়। এরমধ্যে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে চারদিক। রাতভর টুপটাপ শব্দে বৃষ্টির মত ঝরে কুয়াশা। তীব্র এ শৈত্যপ্রবাহের কারণে জেলার জন-জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

গত দু'দিনের মধ্যে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার পর হঠাৎ দেখা মিলেছে সূর্যের। আর এদিন সকাল ৬টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

অপরদিকে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সকাল ৯টায় ১ পয়েন্ট কমে ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তবে কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা অনেকটাই উঠানামা করছে এবং সামনে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে শীতের প্রকোপে ও হিম শীতল হাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে জেলার সাধারণ ও নিম্ন আয়ের মানুষ। শেষ বিকেল থেকে ঘনকুয়াশা শুরু হয়ে রাত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তা বৃষ্টি আকারে তা নেমে আসছে মাটিতে। শীতের প্রকোপ আর কুয়াশার কারণে কোনদিন দুপুর পর্যন্ত আবার কোনোদিন সারাদিনও দেখা মিলছেনা সূর্যের। সন্ধ্যা নামতে না নামতেই শুরু হওয়া ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমেল বাতাসে নাকাল হয়ে পড়েছে জেলার জনজীবন। ঘনকুয়াশার কারণে দিনমজুর, শ্রমজীবী, রিকশা-ভ্যান চালকরা বাইরে যেতে না পারায় দুর্ভোগে পড়েছেন। সব থেকে বেশি শৈত্যপ্রবাহ বইতে দেখা গেছে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায়। আর এ মৌসুমে শীতের কাপড়ের অভাবে দুর্ভোগে দিন পার করছেন দরিদ্র শীতার্ত অনেক মানুষ।

হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়া আর শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে ক্রেতাদের ভিড় করতে দেখা গেছে শীতের কাপড়ের দোকানগুলোতে। অপরদিকে শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় কিনতে শীতের পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন সাধারণ ক্রেতারা। সঙ্গে প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে গ্রাম-গঞ্জের হাট বাজারগুলো।

হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমলে হাওয়ায় শুধু মানুষই না সঙ্গে জড়ো-সড়ো হয়ে গেছে গবাদী পশুও। কেউ কেউ আবার খড়-কুটোতে আগুন জ্বালিয়ে করছেন শীত নিবারণের চেষ্টা। অনেকেই শীতবস্ত্রের সন্ধানে ছুটছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তর ও চেয়ারম্যানের কাছে।

তেঁতুলিয়া সদর উপজেলার আব্দুল হামিদ নামে একজন বাংলানিউজকে জানান, ‘আমরা দিন কামিয়ে দিন খাই’ আর এই ঠাণ্ডার কারণে আমরা কাজে যেতে পারছি না।

করিম উদ্দীন নামে একজন বৃদ্ধ জানান, রাতের বেলা খুব বেশি ঠাণ্ডা লাগে। ঠাণ্ডার কারণে ঘুমাতে পারি না। সরকারি ভাবে যদি একটা কম্বলের ব্যবস্থা করে দিত তবে একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম।

জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, এ জেলায় প্রায় দুই লাখ অসহায় শীতার্ত মানুষ রয়েছেন। তাদের শীতের কাপড় কেনার সামর্থ্য না থাকায় শীতের কাপড়ের অভাবে মানবেতন জীবনযাপন করছে। জেলার এমন দুই লাখ মানুষের জন্য সরকার বরাদ্দ দিয়েছে ২৮ হাজার কম্বল। তবে এ কম্বল দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব না হওয়ায় সরকারের বরাবর আরও কম্বলের চাহিদা পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার (১৯ ডেসেম্বর) বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়স। এ মাসে ক্রমেই রাতের তাপমাত্রা কমবে এবং মাসের শেষের দিকে আরও দুটি শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে এ কর্মকর্তা আরো জানান।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।