ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘রুমে গিয়ে ভিপির ওপর হামলা এনএসএফ-ও করেনি’

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৯
‘রুমে গিয়ে ভিপির ওপর হামলা এনএসএফ-ও করেনি’ ডাকসু ভবনে ভাঙচুর-হামলার প্রতিবাদে সংহতি সমাবেশ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ১৯২১ সালের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ডাকসুর ভিপির রুমে গিয়ে তার ওপর হামলা করার ইতিহাস নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজীমউদ্দীন খান। এ ঘটনায় প্রক্টরকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। 

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ডাকসু ভবনে ভাঙচুর-হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত সংহতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তানজীমউদ্দীন খান বলেন, ১৯২১ সালের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এমন হামলার নজির নেই।

ভিপির রুমে গিয়ে তার ওপর হামলা এনএসএফ-ও (আইয়ুব খানের আমলে গঠিত ন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফেডারেশন) করেনি। মূলত এই হামলার উস্কানি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে হয়েছে। সরকার ও প্রশাসনের যৌথ প্রযোজনায় এ হামলা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রক্টর অফিসের জানালা দিয়ে ডাকসু ভবন দেখা যায়। কিন্তু ঘণ্টাব্যাপী হামলার ঘটনা ঘটলেও প্রক্টরিয়াল টিম নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। এ অবস্থায় দায়িত্ব পালনের ব্যর্থতায় প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে। যে শিক্ষক বহিষ্কারের মানসিকতা নিয়ে প্রশাসন চালান, তারা আর শিক্ষক থাকতে পারেন না।

সমাবেশে আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, এখানে এত ন্যক্কারজনক একটি হামলা হয়েছে, যার নিন্দা জানানোর ভাষা শিক্ষক হিসেবে আমার নেই। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা হলো যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা, নুররা সেটাই করেছে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী বলেন, আপনারা (বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন) শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমি আহ্বান জানাবো, সিসিটিভি ফুটেজ খুঁজে বের করে সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনুন নাহয় পদত্যাগ করুন।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, বিভিন্ন মহল থেকে হামলার সময় নুরের সঙ্গে বহিরাগত ছিল- এমন বক্তব্য দিয়ে হামলাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন হলো, শহীদ ডা. মিলন কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন? ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ সব আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররাও অংশ নিয়েছে। তাহলে এখন বহিরাগত প্রশ্ন আসবে কেন?  

সমাবেশে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- হামলার দায়ভার নিয়ে প্রক্টর ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানীর পদত্যাগ, ডাকসু ভবনের ‘উধাও’ সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার, হামলাকারী ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইদ ফেরদৌস, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম, ভিপি নুরের বাবা ইদ্রিস হাওলাদার প্রমুখ।  

সমাবেশে সংহতি জানান গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, ডাকসুর সাবেক ভিপি আসম আব্দুর রব, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, আমানুল্লাহ আমান ও সাবেক জিএস মোশতাক আহমেদ। লিখিত বিবৃতি পাঠান সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না।

বাংলাদেশ সময়: ০৩২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৯
এসকেবি/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।