তারা বলছে, নতুন বই পেলেও এখনো স্কুলে ভর্তিসহ আরও অনেক খরচ বাকি রয়েছে। এছাড়া বই ছাড়াও আরও অনেক শিক্ষা উপকরণ কিনতে হবে।
এ অবস্থায় সন্তানদের শিক্ষার খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছেন পাটকল শ্রমিকরা। অনেকের পক্ষেই শিক্ষাব্যয় বহন করা দুরূহ হয়ে উঠেছে। তাই ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নতুন বই নিয়ে বাবাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে কোমলমতি শিশুরাও।
আব্দুল মজিদ, শাহীন শেখ ও জাবেদ আলী নামে কয়েকজন শ্রমিক জানান, তারা যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। তারপরও সরকার তাদের দাবি-দাওয়া মেনে নিচ্ছে না।
এমন অবস্থায় তারা ছোট ছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাই বছরের প্রথম দিনে নতুন বই পেলেও তাদের শিশু সন্তানদের মুখে হাসি ফোটেনি। এখন তাদের স্কুলে ভর্তি ও অন্য খরচ নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। প্রায় কমবেশি সব পাটকল শ্রমিকের একই অবস্থা।
এদিকে, তীব্র ঠাণ্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন আন্দোলনরত রাজশাহীর পাটকল শ্রমিকরা। শীতের তীব্রতার মধ্যে খোলা স্থানে পাঁচদিন ধরে তাদের অনশন কর্মসূচি চলছে। গত রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। দিন-রাত একটানা অবস্থানের কারণে তাদের অনেক শ্রমিকই তাই এখন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
তবে বৃহস্পতিবার ঢাকায় আবারও তাদের বৈঠকের কথা রয়েছে। এ বৈঠকে আলোচনা ফলপ্রসূ হলে তারা চলমান কর্মসূচি নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানিয়েছেন।
রাজশাহী পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি জিল্লুর রহমান জানান, আন্দোলনরত রাষ্ট্রায়ত্ত ১২টি পাটকল শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় মন্ত্রণালয়ে বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকে বসবেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। বৈঠকের পর বাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জিল্লুর রহমান জানান, এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের পক্ষে আর ঘরে ফেরা সম্ভব নয়। কেন্দ্রের বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় গত ১০ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা। পরে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার সরকারি আশ্বাসে গত ১৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু দাবি আদায়ে পদক্ষেপ না নেওয়ায় পরে ২৯ ডিসেম্বর থেকে আবার আন্দোলন শুরু করেন তারা।
বর্তমানে রাজশাহী পাটকলের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে দিন-রাত সমানতালে নানান দাবি নিয়ে ক্রমাগত বিক্ষোভ করে চলেছেন তারা।
আরও পড়ুন: স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ৫ম দিনের অনশনে খুলনার পাটকল শ্রমিকরা
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২০
এসএস/এফএম