একই সঙ্গে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলেন তিনি।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এসব কথা বলেন।
এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
মোজাম্মেল হক বলেন, ধর্মসভার আমরা সমর্থন করি। কিন্তু সম্প্রতি ধর্মসভায় ইসলাম বিরোধী যেসব অপপ্রচার করা হচ্ছে বিষয়টি ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেখতে হবে। এ ব্যাপারে আরো সচেতন থাকা উচিৎ। সত্যিকারে যারা এই সমস্ত অপব্যাখা দিচ্ছে, অপপ্রচার করছে তাদের তালিকা তৈরি করে সেই সব তথা কথিত আলেমধারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতের এই দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। যদিও জামায়াতকে দল হিসেবে এখনও নিষিদ্ধ করতে পারিনি। এটা স্বীকার করতেই হবে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
পড়ুন>>‘মিয়ানমার দ্রুত রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে বলে আশা করা যায়’
সম্প্রতি গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের দেওয়া এক বক্তব্যের সমালোচনা করে মোজাম্মেল হক বলেন, দেশের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ড. কামাল হোসেন সম্প্রতি যে কথা বলেছেন, এতে জাতির সঙ্গে আমিও হতবাক হয়েছি, আশ্চর্য হয়েছি, ব্যথিত হয়েছি।
‘অনেকে তাকে বলেন, সংবিধান প্রণেতা, বাস্তবে যাই হোন- তিনি আইনমন্ত্রী থাকাকালে সংবিধান প্রণয়ন হয়েছিল। তখন তিনি সংবিধান প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। সেই কৃতিত্বের অধিকারী তিনি হতেই পারেন। তবে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার অবস্থান রহস্যজনক ছিল। তার মেয়ের জামাতা ডেভিড বার্গম্যান সব সময়ই অবিরতভাবে বিষোদাগার করে আসছেন। ’
তিনি বলেন, আমার মনে হয় তারা (ড. কামাল হোসেন পরিবার) ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের সাফল্য মেনে নিতে পারছে না। তিনি (ড. কামাল) যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, একজন সংবিধান প্রণেতা নিশ্চয়ই সরকারের বিরোধিতা করতে পারেন, সরকার পতনের দাবি করতেই পারেন এটা তার মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে যে শব্দ ব্যবহার করেছেন- সংসদে তার জবাব দেবার সুযোগ নেই। তাই নিন্দা করা ছাড়া বেশি বলবো না।
এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রচলনের উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, যেভাবে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়, সেভাবে মুজিববর্ষের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার এ বছর থেকেই চালু করার প্রস্তাব রাখছি। এছাড়া ইউনেস্কো থেকে যে আন্তর্জাতিক পুরস্কার দেওয়া হয় সেখানে যেন বঙ্গবন্ধুর নামে একটা পুরস্কার প্রচলন করা হয় সে কার্যকর ভূমিকা রাখার দাবি জানাই।
মোজাম্মেল হক বলেন, সংসদ ভবনের পূর্ণাঙ্গ নকশা বাস্তবায়নে লুই আই কানের নকশা বহির্ভূত যেসব স্থাপনা রয়েছে সেগুলো যেন অপসারণ করা হয়। এখানে একজন সেক্টর কমান্ডারের কবর রয়েছে, যিনি আমাদের সংবিধানকে ক্ষত-বিক্ষত করেছেন।
‘সেই জিয়াউর রহমানের কথিত কবর আছে। জিয়াউর রহমানকে যারা হত্যা করেছিলেন তার মরদেহ তারা পুড়িয়ে দিয়েছিল। পরে এখানে কার মরদেহ দাফন করা হয়েছে তা আমার জানা নেই। এই কবর স্থানান্তর করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আপনার (স্পিকার) দৃষ্টি আকর্ষণ করছি,’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২০
এসকে/এমএ