ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আত্মহত্যার আগে সুইসাইড নোটটি লিখেছিলেন সালমান শাহ: পিবিআই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০
আত্মহত্যার আগে সুইসাইড নোটটি লিখেছিলেন সালমান শাহ: পিবিআই চিত্রনায়ক সালমান শাহ। ফাইল ফটো

ঢাকা: বাংলা চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃতদেহের সঙ্গে পাওয়া ‘সুইসাইড নোট’টি তার নিজের হাতে লেখা, বলছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির পিবিআই সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পিবিআই’র প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।

চিত্রনায়ক সালমান শাহর সুইসাইড নোট।                     <div class=

" src="https://www.banglanews24.com/media/imgAll/2020February/bg/suicidenote-salman20200224164917.jpg" style="border-style:solid; border-width:1px; margin:1px; width:100%" />তিনি বলেন, পুলিশ বিভাগে সুনীল কুমার মুখার্জি হ্যান্ড রাইটিং এক্সপার্ট হিসেবে সুপরিচিত। বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি রিপোর্ট দিয়েছেন সুইসাইড নোটটি সালমান শাহর লেখা। সালমান শাহর স্বাক্ষর ও বিভিন্ন সময়ে তার হাতের লেখাগুলো অতি সূক্ষ্ম ভাবে যাচাই বাছাই করে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, সুইসাইড নোটটি সালমান শাহ মৃত্যুর আগে নিজে লিখে গিয়েছেন।

এ থেকেও নিশ্চিত হওয়া যায় যে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন, জানান ডিআইজি বনজ।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে সময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেন তার বাবা প্রয়াত কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।

এরপর ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ এনে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি। ওই সময় অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে (অপরাধ তদন্ত বিভাগ) নির্দেশ দেন আদালত।

তদন্তের পর ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে প্রতিবেদনটি গৃহীত হয়।

কিন্তু সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা করেন। ফলে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠায় আদালত। এরপর প্রায় ১৫ বছরে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।

পরে ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহের মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী ছেলের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে আবেদন করেন।

২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা চৌধুরী ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের নারাজির আবেদন করেন। নারাজি আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন তার ছেলে সালমান শাহর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।

পরে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব)। কিন্তু র‌্যাবের তদন্ত চলাকালে বেশ কয়েকবার শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ১৯ মে মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা বিব্রত বোধ করে ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে মামলার নথি পাঠিয়ে দেন।

এ আদালতের বিচারক মো. ইমরুল কায়েস ওই বছরেরই ২১ আগস্ট র‌্যাবের মাধ্যমে পুনঃতদন্তের (অধিকতর) আদেশ আইনসম্মত হয়নি উল্লেখ করে বিষয়টি আবারও শুনানি নেওয়ার জন্য সিএমএম আদালতকে দায়িত্ব দেন।

এর ধারাবাহিকতায় ওই আদালতের বিচারক লস্কর সোহেল রানা নারাজি আবেদনের ওপর আবারও শুনানি করেন। পরে ৭ ডিসেম্বর শুনানির পর সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনা হত্যা না আত্মহত্যা— তা তদন্ত করতে পিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এরপর সবশেষ গত ২ ফেব্রুয়ারি আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিন প্রতিবেদন দাখিল না করে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা পুনরায় সময় চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আগামী ৩০ মার্চ তারিখে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০
এমএমআই/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।