বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কেন্দ্রীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। সোয়া ৪টায় শুরু হয়ে প্রায় ২ ঘণ্টার মতো চলে এ ভিডিও কনফারেন্স।
মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে কেন্দ্রীয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের এ ভিডিও কনফারেন্স আয়োজন করা হয়।
মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কেন্দ্রীয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলেন, সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ। ধর্মীয় বা অন্য যে কোনো ধরনের জমায়েত বন্ধ। এটা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে। যে কোনোভাবে সব ধরনের সমাবেশ বা জমায়েত বন্ধ রাখতে হবে।
হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা স্বজনদেরও মসজিদে না যাওয়ার নির্দেশ
হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজনদের মসজিদ, মন্দিরসহ যে কোনো জনসমাগম যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সাধারণ জনগণের মধ্যে যাদের জ্বর, সর্দি-কাশি তাদেরও এ নির্দেশ মানতে বলা হয়েছে। এটি নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনগণসহ প্রশাসনকে কঠোর ও তৎপর হতে বলা হয়েছে।
হোম কোয়ারেন্টিন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের ওপর নজরদারি বাড়াতে হবে, তাদের কঠোর নজরদারিতে রাখতে হবে। হোম কোয়ারেন্টিন ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। কঠোরভাবে মানতে হবে নইলে পুরো জাতিকে এ জন্য ভুগতে হবে।
হোম কোয়ারেন্টিন মানার ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়।
হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের আত্মীয় স্বজনদেরও মসজিদে বা জনসমাগম স্থলে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের বিরত রাখতে স্থানীয় জনগণকে উদ্যোগী হওয়ার কথা বলা হয়।
মসজিদ বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে কেন্দ্রীয় প্রশাসন থেকে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বলা হয়, তবে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের স্বজনরা যেন মসজিদ, মন্দির বা কোনো জনসমাগম স্থলে না যায়। এছাড়া যাদের জ্বর, সর্দি-কাশি তারাও যেন মসজিদে না যান।
গত তিন মাসে যারা বিদেশ থেকে এসেছেন তাদের তালিকা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে। যাতে প্রশাসন এসব ব্যক্তিদের মনিটরিং এর আওতায় আনা যায়।
‘তিন মাসের মধ্যে যারা এসেছেন তাদের বিষয়ে খোঁজ নিতে বলা, তারা কেউ অসুস্থ হয়েছিলেন কিনা, গত এক মাসের মধ্যে যারা এসেছেন তাদেরও খোঁজ নিয়ে কোনো লক্ষণ না থাকলে সমস্যা নেই। কিন্তু যারা গত ১৫ দিনের মধ্যে এসেছেন তাদের মনিটরিংয়ে আনতে বলা হয়, প্রয়োজনে হোম কোয়ারেন্টিন বা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নিতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় প্রশাসন।
আপাতত ট্রান্সপোর্ট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেই বলে জানানো হয় সভায়। তবে কারো জ্বর, সর্দি-কাশি হলে তাদের যাতায়াত না করতে বলা হয়েছে।
সরকারের সব কিছু মনিটরিং করছে এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকার কথা জনগণ জানাতে বলা হয়। যাতে মানুষ আতঙ্কিত না হয়।
চিকিৎসাসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জন্য সুরক্ষা গাউনের পর্যাপ্ত সরবরাহ করা হচ্ছে। এসব ইক্যুইপমেন্ট তৈরি করা হচ্ছে বলে সভায় জানানো হয়।
স্থলবন্দরগুলোতে কঠোর মনিটরিং নিশ্চিতের নির্দেশ দেওয়া হয় সভা থেকে।
পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজার মনিটরিং বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
সচিবালয়ের কেবিনেট ডিভিশন থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস ভিডিও কনফারেন্সে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, শিক্ষা সচিব মো: মাহবুব হোসেন।
সচিবালয়ের কেবিনেট ডিভিশন থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, স্বাস্থ্য সচিব মো. আসাদুল ইসলামসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবগণ। বিভিন্ন বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২০
এমইউএম/এএ