ঢাকা, বুধবার, ১ মাঘ ১৪৩১, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

লকডাউনেও করোনা উপদ্রুত এলাকা থেকে রাজশাহীতে আসছে মানুষ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২০
লকডাউনেও করোনা উপদ্রুত এলাকা থেকে রাজশাহীতে আসছে মানুষ ফাইল ছবি

রাজশাহী: পুরো জেলায় লকডাউন থাকলেও প্রতিদিনই বিভিন্ন কৌশলে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত নারায়ণগঞ্জ, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে রাজশাহীতে আসছে মানুষ। লকডাউনের ভেতরেই কুরিয়ার সার্ভিসের ক্যাভার্ড ভ্যানে, মাছ সরবরাহের মিনি ট্রাকে, মালবাহী ট্রাক, ভাড়ার অ্যাম্বুলেন্স ইত্যাদি যানবাহনে করে লোকজন রাজশাহীতে প্রবেশ করছে।

এর আগে মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) রাজশাহীতে লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) পর্যন্ত রাজশাহীতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন চারজন।

কিন্তু তাদের কেউই স্থানীয় স্থায়ী বাসিন্দা নন। এ চারজনের মধ্যে তিনজন এসেছেন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হটস্পট নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে। অপর একজন এসেছেন রাজধানী ঢাকা থেকে। স্থানীয়ভাবে এখনও কেউই কোভিড-১৯ আক্রান্ত হননি।

রাজশাহীতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের জন্য ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা মানুষকে তাই দায়ী করছেন চিকিৎসক ও স্থানীয়রা।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভিড-১৯ চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল টিমের প্রধান ডা. আজিজুল হক আজাদ বলেন, রাজশাহীকে করোনামুক্ত রাখতে হলে আগে ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ মানুষের আসা বন্ধ করতে হবে। আর যারা এর মধ্যেই এসেছেন, তাদের চিহ্নিত করে সবার নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, কেউ ঢাকা কিংবা নারায়ণগঞ্জ থেকে আসলেই জনস্বার্থে তা স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ বা জনপ্রতিনিধিদের জানান। তারা যেন এই মানুষগুলোকে আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করেন, যাতে চিকিৎসকরা তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে পারেন।

এদিকে, রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে, ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজশাহী জেলায় ৯৭ জন মানুষ প্রবেশ করেছে। এদের মধ্যে ঢাকা থেকে এসেছে ৪৬ জন এবং নারায়নগঞ্জ থেকে এসেছে ১৫ জন।

এছাড়া মাগুরা জেলা থেকে চারজন, কুষ্টিয়া জেলা থেকে একজন, নাটোর জেলা থেকে একজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে একজন, রংপুর থেকে চারজন, গাজীপুর থেকে দু’জন, মানিকগঞ্জ থেকে ১৩ জন, ফেনী থেকে দু’জন, খুলনা থেকে তিনজন, শরীয়তপুর থেকে দু’জন এবং মুন্সিগঞ্জ থেকে এসেছেন দু’জন।

এর আগে ২৬ মার্চ রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ একটি কুরিয়ার সার্ভিসের ক্যাভার্ডভ্যান থেকে ২০ জনকে বের করে। এ ঘটনায় আহমেদ পার্সেল সার্ভিস নামের ওই কুরিয়ার সার্ভিসের অফিস সিলগালা করা হয়। সেইসঙ্গে ক্যাভার্ডভ্যানটিও জব্দ করা হয়। এর পাশাপাশি এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে ওই প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় ম্যানেজার নবুয়ত আলিকে নগদ এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম বাংলানিউজকে বলেন, রাজশাহী শহরের প্রবেশমুখগুলোতে মহানগর ও জেলা পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়েছে। এই চেকপোস্টগুলোতে ২৪ ঘণ্টাই নজরদারি করা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানোর পর এর বাইরে থাকা বিভিন্ন লিংক রোড দিয়ে তারা জেলায় ঢুকছে।

এজন্য লিংক রোডগুলোতেও নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে বলে জানান রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২০
এসএস/এবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।