ঘটনার প্রতিবাদ করতে থানায় গেলে পুলিশ মিলনের ভাই বাবু মুন্নাকেও আটক করে। শনিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজশাহীর পবা উপজেলার দর্শনপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসিদের অভিযোগ, পবার দর্শনপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল রাজ তার পছন্দের লোকজনদের একাধিকবার খাদ্য সামগ্রী দিয়েছেন। কিন্তু প্রকৃত অসহায় ও দরিদ্র মানুষগুলোকে তিনি সরকারি ত্রাণ দেননি।
ত্রাণ না পাওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে মিলন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এর জেরে শনিবার (১৮ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে চেয়ারম্যান কামরুল হাসান তার লোকজনকে দিয়ে মিলনকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নেন।
এরপর চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্য হাসান মিলে মিলনকে মারধর করেন। এতে মিলনের হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে যায়। পরে চেয়ারম্যান নিজে মিলনকে ধরে কর্ণহার থানায় নিয়ে যান। সেখানে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা ছড়ানোর অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতারের প্রতিবাদ করতে থানায় গেলে পুলিশ মিলনের ভাই বাবু মুন্নাকেও আটক করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিলনকে নির্যাতনের ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে এলাকা উতপ্ত হয়ে উঠে। প্রতিবাদে ওই এলাকার শতাধিক লোকজন থানা ঘেরাও করে মিলনকে মারধর ও গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানান। এ সময় তারা চেয়ারম্যানের শাস্তিও দাবি করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সনিয়া বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার সরকারি ও বেসরাকারি ত্রাণ পাইনি। খেয়ে না খেয়ে অনেক কষ্টে আছি। আমাদের এই কষ্ট দেখে মিলন সত্য কথা ফেসবুকে তুলে ধরেন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান মিলনকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছেন।
চেয়ারম্যান কামরুল হাসান রাজ বলেন, ইউনিয়নের যতগুলো ত্রাণ সামগ্রী এসেছিলো সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করা হয়েছে। আরও অনেকে পাবেন। কিন্তু এ নিয়ে ফেসবুকে অপপ্রচার করা হয়েছে। আর মিলনকে মারধরের অভিযোগ ঠিক নয়।
তিনি আরো বলেন, মিলন মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। এ কারণে মিলনকে ধরে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করা হয়েছে।
রাজশাহীর কর্ণহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ত্রাণ নিয়ে মিথ্যা প্রচার করার অপরাধে মিলনকে এবং এ ধরনের ভিডিও ধারণ করে অপপ্রচার চালানোর সহযোগিতা করায় মিলনের ভাই বাবু মুন্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মিলনের পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় এসে কোনো অভিযোগ করেননি। তাকে নির্যাতনের বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান কর্ণহারের এই পুলিশ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময় : ২১৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২০
এসএস/ওএফবি