তার বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার গাওপাড়া গ্রামে। তিনি পেশায় একজন কুলা বিক্রেতা ছিলেন।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চিকিৎসক টিমের প্রধান ডা. আজিজুল হক আযাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত এ রোগীর শ্বাসকষ্ট ছিল। গত কয়েকদিন আগে তার অবস্থার অবনতি ঘটে। সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) নির্দেশিত উপায়ে তার মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এজন্য কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনকে খবর দেওয়া হয়েছে।
ডা. আজিজুল হক বলেন, এ নিয়ে রাজশাহীতে করোনা শনাক্ত আটজন রোগীর মধ্যে প্রথম কারো মৃত্যু হয়েছে।
গত ১২ এপ্রিল থেকে সর্বশেষ গত ২০ এপ্রিল পর্যন্ত রাজশাহীতে মোট আটজনের করোনা শনাক্ত হয়। বাঘা উপজেলার এ বৃদ্ধের করোনা শনাক্ত হয় গত ২০ এপ্রিল।
বাকি সাতজনের বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়া, বাগমারা, মোহনপুর ও বাঘা উপজেলায়। এদের মধ্যে সাতজনই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর থেকে এসেছেন। কিন্তু বাঘায় আক্রান্ত এ ব্যক্তির সে ধরনের কোনো ভ্রমণ ইতিহাস ছিল না। বর্তমানে করোনা আক্রান্ত অন্য সাতজন নিজ বাড়িতেই আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল। মহানগরে এখনও করোনা আক্রান্ত কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি।
জ্বর ও প্রস্রাবের সমস্যার কথা বলে রামেক এসেছিলেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ৮০ বছর বয়সী এ বৃদ্ধ। গত ১৭ এপ্রিল তিনি প্রথমে হাসপাতালে আউটডোর ইউনিটে চিকিৎসার জন্য আসেন। পরে হাসপাতালের ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে তাকে ভর্তি করা হয়। শারীরিক সমস্যা অনুযায়ী সেখানে তাকে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
তবে পরে তাকে এক্সরে করানো হলে করোনার কিছু উপসর্গ দেখতে পান চিকিৎসকরা। করোনা আক্রান্ত সন্দেহ হওয়ায় সাধারণ ওয়ার্ড থেকে করোনা ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয় তাকে। এরপর গত ২০ এপ্রিল তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করলে তার শরীরে করোনা শনাক্ত হয়।
সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স ও অন্য রোগীসহ অনেকেই তার সংস্পর্শে আসেন। নমুনা পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এবার ওই রোগীর স্ত্রী ও ছেলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেখা হয়। তবে তাদের ফালাফল নেগেটিভ আসে। এর পর কোনো ধরনের সুরক্ষা পোশাক ছাড়াই তার সংস্পর্শে এসেছিলেন এমন ৪২ জন চিকিৎসক-নার্স ও কর্মচারীকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়।
পরে জানা যায় কোয়ারেন্টিনে পাঠানো রামেক হাসপাতালের ৪২ চিকিৎসক-নার্স ও কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত নন। গত ২২ এপ্রিল ও গত ২৩ এপ্রিল রামেকের ল্যাবে তাদের সংগ্রহকৃত নমুনা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু এ দুইদিনে হাতে আসা তাদের রিপোর্টে ফলাফল নেগেটিভ আসে। এদের মধ্যে ২১ জন চিকিৎসক, ১২ জন নার্স ও ৯ জন সহায়ক কর্মচারী।
বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২০
এসএস/আরবি/