ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পেন্সিলে আঁকা স্কেচে ধর্ষক ধরলো পুলিশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৮ ঘণ্টা, মে ২, ২০২০
পেন্সিলে আঁকা স্কেচে ধর্ষক ধরলো পুলিশ

ঢাকা: রাজধানীর কদমতলী এলাকায় ছয় বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষককে গ্রেফতারে সিসিটিভির সহায়তা নেয় পুলিশ। ১৬টি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে একজনকে শনাক্ত করা গেলেও মাস্ক পরিহিত থাকায় তার চেহারা চেনার উপায় নেই।

এবার একটু ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করলেন পুলিশের এক কর্মকর্তা। চিত্রশিল্পীর সহায়তায় মাস্ক পরিহিত ওই ব্যক্তির স্কেচ আঁকিয়ে নেন তিনি।

পরে স্কেচের ওপর ভিত্তি করেই টুটুল (২০) নামে ওই ধর্ষককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

শুক্রবার (০১ মে) দিনগত রাতে কদমতলী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার টুটুলের বাসা মুগদা এলাকায়। তবে তিনি মাঝে মধ্যে কদমতলীতে তার নানা ও খালার বাসায় ঘুরতে আসতেন।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ২৫ এপ্রিল কদমতলীরর মুরাদনগর এলাকায় ছয় বছরের একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হন। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনায় শিশুটির বাবার দায়েরকৃত মামলার ভিত্তিতে কয়েকদিনের টানা প্রচেষ্টায় ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়।

ডিএমপির শ্যামপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) শাহ আলম বাংলানিউজকে বলেন, শিশুটি ধর্ষণের ঘটনার পর থেকেই ধর্ষককে ধরতে তৎপরতা শুরু করে পুলিশ। ঘটনাস্থল ও তার আশপাশের বিভিন্ন ভবনের ১৬টি সিসিটিভি ক্যামেরার গত ২০ থেকে ২৫ এপ্রিলের ফুটেজ আমরা সংগ্রহ করি। ঘটনাস্থলের কাছেই একটি বাসার সিসিটিভির ফুটেজে মাস্ক পরিহিত এক যুবককে ওই শিশুটির হাত ধরে যেতে দেখা যায়।

পরে যুবকটি ওই এলাকার কিনা বিষয়টি নিশ্চিত হতে আমরা অন্য ফুটেজগুলোও বিশ্লেষণ করি। কোনো ফুটেজে গত কয়েকদিনে এলাকার কারো সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছে কিনা বিষয়টি যাচাই করি। ফুটেজে দেখা মাস্ক পরিহিত ওই যুবকের ছবি এলাকার লোকজনকে দেখালেও কেউ শনাক্ত করতে পারছিলেন না। একেতো ভিডিও ফুটেজে চেহারা স্পষ্ট দেখা যায় না, তার মধ্যে করোনার সময়ে মাস্ক পরিহিত থাকায় কোনোভাবেই বোঝা যাচ্ছিল না।

এসি শাহ আলম বলেন, মাস্ক পরিহিত থাকায় ওই যুবককে শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। তখনই কোনো চিত্রশিল্পীর সহায়তা নিয়ে তার স্কেচ আঁকানোর বিষয়টি মাথায় আসে। এমন ভাবনা থেকেই আমার পূর্ব পরিচিত প্রফেশনাল আর্টিস্ট সাখাওয়াত তমালের শরণাপন্ন হই। তাকে মাস্ক পরিহিত ছবিটি পাঠালে তিনি আমাকে একটি স্কেচ এঁকে দেন।

স্কেচটি পাবার পর শুক্রবার সকালে প্রিন্ট করিয়ে সেটি পুরো এলাকায় ছড়িয়ে দিলাম। স্কেচ থেকে স্থানীয় কয়েকজন ওই ধর্ষককে শনাক্ত করতে সক্ষম হন। এরপর কদমতলী এলাকায় টানা ছয় ঘণ্টার চিরুনী অভিযানের পর আমরা আসামি টুটুলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।

গ্রেফতার টুটুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছে উল্লেখ করে এসি শাহ আলম বলেন, স্কেচটি এতো সুন্দর হয়েছে যে আসামির চেহারার সঙ্গে প্রায় হুবহু মিলে গেছে। এর ফলে আমরা দ্রুতই আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, মে ০২, ২০২০
পিএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।