শনিবার (৬ জুন) তৃতীয়বারের মতো নমুনা পরীক্ষায় তাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
গত ১৫ মে মহানগরীর প্রথম আক্রান্ত ওই নারীর করোনা শনাক্ত হয়।
করোনা জয়ী উম্মে কুলসুম (৫০) মহানগরীর উপরভদ্রা এলাকার থাকেন। তার স্বামী খাদেমুল ইসলাম (৬১) এবং মেয়ে রুকাইয়া ইসলামেরও (১৯) করোনা শনাক্ত হয়।
উম্মে কুলসুম একজন গৃহিণী। তার স্বামী খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। রুকাইয়া ইসলাম ঢাকা সিটি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তার ছোট ছেলে কাওসার ইসলাম কমল নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের এইচএসসি’র শিক্ষার্থী।
আক্রান্ত নারীর বড় ছেলে শিবলী ইসলাম কানন বাংলানিউজকে বলেন, শুক্রবার (০৫ জুন) তৃতীয় দফা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা শেষে শনিবার (০৬ জুন) রাতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম ফেরদৌস নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে বলে ফোন করে জানিয়েছেন। তারা সবাই এখন করোনামুক্ত। আমাদের বাড়ির লকডাউন তুলে নেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উম্মে কুলসুম তার পুত্রবধূর সঙ্গে ছোট ছেলে কাওসারকে দেখেতে গিয়েছিলেন মাস দু'য়েক আগে। তারা গত ১০ মে রাজশাহীতে ফেরেন।
বাড়িতে পৌঁছে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় তাদের 'ট্রাভেল হিস্ট্রি'র বিষয়ে জানালে পুলিশ তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করে। পরে করোনা পরীক্ষার জন্য উম্মে কুলসুম, তার ছোট ছেলে এবং পূত্রবধূর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ১৫ মে উম্মে কুলসুমের করোনা শনাক্ত হয়। কয়েকদিন পর তার স্বামী এবং মেয়েরও করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে।
শিবলী ইসলাম কানন বলেন, ছোট বোন রুকাইয়া ইসলাম কয়েকদিন শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ ছিলে। তবে মা-বাবার তেমন উপসর্গ দেখা দেয়নি। তাদের প্রত্যেককে আলাদা আলাদা ঘরে রেখে চিকিৎসা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সবেমাত্র আমাদের পরিবারকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এখনই কেউ বাসার বাইরে যাবে না। আমিও চাকরির সুবাদে বাইরে থাকি। কিন্তু রাজশাহী শহরের কোনো করোনা আক্রান্ত পরিবারের কারও কোনো সহযোগিতা লাগলে অবশ্যই আমরা এগিয়ে যাব। কারণ, আমরা ওই সময়টা পার করেছি। আমরা বুঝেছি, সময়টা কত কষ্টকর পার করতে হয়। এই সময়টা মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
এদিকে, মহানগরীর প্রথম আক্রান্ত উম্মে কুলসুম পরিপূর্ণভাবে সুস্থ হওয়ায় তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। করোনা জয় করায় রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় নিয়ে গিয়ে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মন বলেন, পরিবারটি খুবই সচেতন। কীভাবে করোনা জয় করতে হয় তা তারা দেখিয়ে দিলেন। এভাবে সব মানুষ যদি সচেতন থাকতেন তাহলে করোনা মোকাবিলা সহজ হয়ে যেতো।
রাজশাহী জেলায় প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ১২ এপ্রিল পুঠিয়া উপজেলায়।
এরপর ১৫ মে রাজশাহী শহরে প্রথম শনাক্ত হন উম্মে কুলসুম। রাজশাহীতে এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৭৬ জন। এর মধ্যে ২১ জন রাজশাহী মহানগরীর বাসিন্দা।
মোট করোনা আক্রান্ত ৭৬ জনের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। আর একই পরিবারের এই তিনজনকে ধরলে এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৬ জন করোনা পজিটিভি।
বাংলাদেশ সময়: ০৬১০ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০২০
এসএস/এমএইচএম