ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শিক্ষাবর্ষ বাড়তে পারে, ২০২১ সালে কমবে ছুটি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২০ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২০
শিক্ষাবর্ষ বাড়তে পারে, ২০২১ সালে কমবে ছুটি!

ঢাকা: করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পোষাতে চলতি বছরের শিক্ষাবর্ষ যেতে পারে আগামী বছর। আর ২০২১ সালের শিক্ষাবর্ষে ছুটি কমানোর চিন্তা করছে সরকার।

শনিবার (২৭ জুন) শিক্ষা বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) আয়োজিত ‘করোনায় শিক্ষার চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল সেমিনারে এ ভাবনার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।

গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ক্লাস চলছে টিভি এবং অনলাইনে।

উচ্চশিক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও অনলাইন ক্লাসের দিকে যাচ্ছে। তবে শতভাগ শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না, পরীক্ষাও আটকে আছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কবে খুলবে, তা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা জানি না; আগস্টে কী খুলতে পাবর, সেপ্টেম্বরে খুলতে পারব, কবে খুলতে পারব আমরা কিন্তু জানি না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সবচেয়ে বড় ব্যাপারটি হলো- যখন একজন আমরা কেউ রাস্তায় বের হই, নিশ্চয়ই ঝুঁকি নিয়ে বের হই। কিন্তু আমরা যখন একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাব, সেখানে শিক্ষার্থীদের যে বয়স তাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে হয় তো তারা যে আক্রান্ত হয়েছেন, সেটির বহিঃপ্রকাশ থাকবে না। কিন্তু তারা তাদের পরিবারে বয়স্ক বা অসুস্থদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেবে। সে রকম আমরা কিন্তু বিরাট একটা ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেব।

‘আমরা এই কোটি কোটি শিক্ষার্থী, কোটি কোটি পরিবার- তাদের নিশ্চয়ই এই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না। সে জন্য আমাদের শিক্ষাটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে ভিন্নভাবে। সেটি ভাবতে হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার মতো কোনো অবস্থাই নেই। আমাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে হবে, তারপরে বুঝব যে কবে খোলা যাবে। ’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যদি অনেক দেরি হয়, আমাদের শিক্ষাবর্ষকে কী জানুয়ারি-ডিসেম্বরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখব? না-কি আগামী বছরের এক মাস, দুই মাস, তিন মাস; এই শিক্ষাবর্ষে অন্তর্ভুক্ত করে ফেলব? পরের শিক্ষাবর্ষ তাহলে নয় মাসে হয়ে যাবে। আমরা কিন্তু ভাবছি, প্রস্তুতির মধ্যে রাখছি। এই অনিশ্চয়তার মধ্যে একেবারে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া এই মুহূর্তে কোনোভাবেই সম্ভব না।

‘হিসাব করে দেখেছি বছরে ১৪০-১৪২ দিনের বেশি পাঠদান করতে পারি না। এত ধরনের ছুটি ও অনুষ্ঠানাদি থাকে। করোনার কারণে যে দিনগুলো হারিয়ে ফেলেছি তখন আমাদের বাকি ছুটিগুলো বাদ দিয়ে হলেও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা-গবেষণায় ঠিক জায়গায় রাখতে পারি, সেটি আগামী শিক্ষাবর্ষে চেষ্টা করব। ’

সিলেবাস কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা গভীরভাবে পর্যালোচনা করেছি। একটি ক্লাসে পরীক্ষা নেওয়াটাই মূল উদ্দেশ্য নয়। পরবর্তী ক্লাসের সিলেবাস যেন বুঝতে সুবিধা হয়। পরীক্ষা হলো সাধারণ একটা অ্যাসেসমেন্ট পরবর্তী ক্লাসে যাওয়ার জন্য। এবার অনেক দিন আমাদের চলে গেছে, আমরা যখন খুলব তখন কীভাবে পরবর্তী ক্লাসের জন্য অত্যাবশ্যকীয় বিষয় যেগুলো আছে, সেগুলো নিয়ে কাজ করছি।

‘বছরে ১০০ দিনের বেশি সরকারি ছুটি এবং অন্যান্য কার্যক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ থাকে। প্রয়োজনে এই সংখ্যা আগামী শিক্ষাবর্ষে কমিয়ে যেন সময় বেশি দিতে পারি, সেটা নিয়ে কাজ করছি। শুধু মাধ্যমিক নয়, সব পর্যায়ে। যে তারিখে পরীক্ষা নেওয়ার কথা সেগুলো একটু সিফট করা, এডজাস্ট করা। ’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য এডাপ্ট করে স্কুল-কলেজ খোলার আহ্বান জানান গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. মনজুর হোসেন এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. ফারহানা খানম।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ইরাব সভাপতি মুসতাক আহমদ এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইরাবের সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক।

** এইচএসসিতে পরীক্ষা কমানোর ভাবনা আছে: শিক্ষামন্ত্রী

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২০
এমআইএইচ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।