ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ধর্ষণ মামলায় যুবককে ফাঁসানোর অভিযোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২০
ধর্ষণ মামলায় যুবককে ফাঁসানোর অভিযোগ সংবাদ সম্মেলন/ ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: রাজশাহীতে এক যুবককে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মনিরুজ্জামান মান্না (২৯) নামের এই যুবক বর্তমানে ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় দুই মাস ধরে কারাগারে।

বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি করা হয়েছে।

৬ আগস্ট এক তরুণী তার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। মান্নার বাড়ি নগরীর দরগাপাড়া এলাকায়। তিনি ব্যবসা করেন। আর ওই তরুণীর বাড়ি নগরীর বহরমপুর এলাকায়।

সংবাদ সম্মেলনে মান্নার মা হাসিবা পারভীন বলেন, ২০১৫ সাল থেকে মেয়েটির সঙ্গে তার ছেলের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। এ সুযোগে মেয়েটি তার ছেলের কাছ থেকে দামি দামি উপহারসহ মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। সে মান্নাকে প্রেমের প্রস্তাব দিত। বিয়ে করতে চাইতো। কিন্তু মান্না জানতে পারে মেয়েটির একাধিক ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। এ জন্য মান্না তাকে এড়িয়ে যেতে শুরু করে। কিন্তু মেয়েটি তাকে নানাভাবে হুমকি দিত। এ জন্য ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল মান্না নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিল। এরপর থেকে তাদের যোগাযোগ বন্ধই ছিল। হঠাৎ এ বছরের ৬ আগস্ট থানায় মামলা করে ওই মেয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মান্নার সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় ওই তরুণী ৫টি মোটর সাইকেলে ১২ জন অপরিচিত যুবককে সঙ্গে নিয়ে বাসায় আসেন। এ সময় মান্নার সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। বাসা থেকে ওই তরুণী তার বন্ধুদের নিয়ে চলে যাওয়ার সময় মান্নাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরদিন মান্না ও তার বোন শিলার নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন তিনি। ওই দিনই মান্নাকে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদিকে মামলায় ধর্ষণের তারিখ হিসেবে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ওই সময় মান্না চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন।

মামলায় শামীম নামে ব্যক্তির ভাড়া বাসাকে ধর্ষণের স্থান হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ বোয়ালিয়া থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করতে গেলে ওই বাসার মালিক জানিয়েছেন, তার বাসায় শামীম নামে কোনো ভাড়াটিয়া ছিলেন না।  

পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে। তদন্ত শেষে পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে। সেখানেও মামলার বাদী ঘটনার তারিখ নিয়ে রহস্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, সেটাও উল্লেখ করা হয়েছে। আর তার মেডিক্যাল রিপোর্টে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, তার সঙ্গে জোরপূর্বক কোনো ধরনের যৌন সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষণ পাওয়া যায়নি।

হাসিবা পারভীন বলেন, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে আমার ছেলে জেলহাজতে আছে। আমরা সমাজের কাছে প্রতিনিয়ত হেয় হচ্ছি। আর মামলার বাদী বিভিন্ন সময় আমাদের পুরো পরিবারের ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে আসছে।

মামলার বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে ওই তরুণী দাবি করেন, মান্না বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছেন। তাই তিনি মামলা করেছেন। মামলা সত্য।

এজাহারে উল্লেখ করা ধর্ষণের সময় আসামি বিদেশে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।  

মেডিক্যাল রিপোর্টের বিষয়ে বলেন, রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে চারদিন পর। সে কারণে এমন রিপোর্ট হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২০
এসএস/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।