ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মা সেতুর ৩৫তম স্প্যান বসাতে বাধা হতে পারে নাব্যতা সংকট

সাজ্জাদ হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২০
পদ্মা সেতুর ৩৫তম স্প্যান বসাতে বাধা হতে পারে নাব্যতা সংকট

মুন্সিগঞ্জ: কারিগরি জটিলতা এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পদ্মাসেতুর ৩৫তম স্প্যান বসতে পারে শনিবার (৩১ অক্টোবর)। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের ৮ ও ৯ নম্বর পিলারের ওপর সফলভাবে স্প্যান ‘টু-বি’ বসানো গেলে দৃশ্যমান হবে সেতুর ৫ হাজার ২৫০ মিটার।

বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে পদ্মাসেতুর প্রকৌশলী সূত্র বাংলানিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


৩৫তম স্প্যান বসানো গেলে বাকি থাকবে ছয়টি স্প্যান। ৩৪তম স্প্যান বসানোর ৬ দিনের মাথায় বসতে যাচ্ছে স্প্যান ‘টু-বি’। চলতি মাসে তিনটি স্প্যান বসানো হয়েছে, আর এটি নিয়ে সংখ্যা দাঁড়াবে চারটি। তবে প্রাকৃতিক কারণ বাধা হয়ে দাঁড়ালে শিডিউল পরিবর্তন হতে পারে।  তবে সম্প্রতি ওই দুই পিলারের কাছে দেখা দিয়েছে নাব্যতা সংকট যে কারণে দুশ্চিন্তায় রয়েছে প্রকৌশলীরা।

প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, ৩৫ তম স্প্যানটি বসানোর কথা ছিল ৩০ অক্টোবর। কিন্তু সেখানে দেখা দিয়েছে নাব্যতা সংকট। কিছুদিন আগেও ৮ ও ৯ নম্বর পিলারের কাছে পানির গভীরতা ছিল ৭০ ফুট এর বেশি। কিন্তু বর্তমানে পানি আছে প্রায় ৭ ফুট। এমন পরিস্থিতি থাকলে ভাসমান ক্রেনটি স্প্যান বহন করে নিয়ে যেতে পারবে না। এজন্য সেখানে ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে। ড্রেজিং শেষে পর্যাপ্ত গভীরতা আসলে স্প্যান রওনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের বাংলানিউজকে জানান, যেখানে স্প্যান বসবে সেখানে নাব্যতা সংকট। এরজন্য ড্রেজিং চলছে। এখনো তারিখ নির্ধারণ হয়নি। তবে নাব্যতা সংকট নিরসন হলে ৩১ অক্টোবর ও ১ নভেম্বরের মধ্যে বসিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।

পদ্মাসেতুর মূল সেতুর প্রকৌশলী বাংলানিউজকে জানান, সেতুর ৮ ও ৯ নম্বর পিলারের অবস্থান লৌহজং উপজেলার পদ্মানদীতে। মূল নদীতে স্প্যান বসানোর জন্য খুব সতর্কতার সঙ্গে করতে হয়। মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়ায় অবস্থিত কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ধূসর রঙয়ের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটি বহন করে নিয়ে যাবে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ভাসমান ক্রেন ‘তিয়ান-ই’। এখনো স্প্যান রওয়ানা দেওয়ার কোনো সময় নির্ধারণ করেনি সেতু কর্তৃপক্ষ। কেননা স্প্যান রওয়ানা দেওয়ার জন পদ্মানদীর অনুকূল পরিস্থিতি থাকা জরুরি। শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) অথবা শনিবার (৩১ অক্টোবর) যেকোনো দিন স্প্যান বহন করে নিয়ে যাওয়া হবে। পিলারের ওপর স্প্যান বসানোর জন্য দুই দিন সময় নেওয়া হয়ে থাকে। এই সময়ের মধ্যে স্প্যান পিলারের ওপর বসিয়ে দেওয়া হয়। যেসব স্প্যান বসানো বাকি এগুলোর অবস্থান মাওয়া প্রান্তে।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডের সামনে ভাসমান ক্রেনটিকে স্প্যানটি বহন করতে দেখা যাচ্ছে। ক্রেনে স্প্যানটিকে রওয়ানা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।  

জানা যায়, দুই পিলারের সামনে নোঙর করবে স্প্যানবহনকারী ক্রেনটি। এরপর পজিশনিং করে স্প্যানটিকে তোলা হবে পিলারের উচ্চতায়। রাখা হবে দুই পিলারের বেয়ারিং এর উপর। এরপর পাশের ৭-৮ নম্বর পিলারের স্থাপন করা স্প্যানের সঙ্গে ঝালাই করে দেওয়া হবে। যেটি করতে কয়েকদিন সময় লাগবে। আর এই স্প্যান বসানোর সময় ওই পথ দিয়ে নৌযান চলাচলে অন্য রুট চলার নির্দেশনা থাকবে।  

অন্যদিকে, পদ্মাসেতুতে ৪ নভেম্বর পিলার ২ ও ৩ নম্বরে ৩৬তম স্প্যান ‘১-বি’, ১১ নভেম্বর পিলার ৯ ও ১০ নম্বরে ৩৭তম স্প্যান ‘২-সি’, ১৬ নভেম্বর পিলার ১ ও ২ নম্বরে ৩৮তম স্প্যান ‘১-এ’, ২৩ নভেম্বর পিলার ১০ ও ১১ নম্বরে ৩৯তম স্প্যান ‘২-ডি’, ২ ডিসেম্বর পিলার ১১ ও ১২ নম্বরে ৪০তম স্প্যান ‘২-ই’ ও ১০ ডিসেম্বর সবশেষ ৪১ নম্বর স্প্যান ‘২-এফ’ বসবে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর।  

মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।