ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

‘বঙ্গবন্ধুর জীবিত ফিরে আসায় স্যার আবেদের ভূমিকা ছিল’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২০
‘বঙ্গবন্ধুর জীবিত ফিরে আসায় স্যার আবেদের ভূমিকা ছিল’

ঢাকা: পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীন বাংলাদেশে জীবিত ফেরত আসার পেছনে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ও ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

রোববার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে গেরিলা কমান্ডার মেজর এটিএম হায়দার বীর উত্তম মিলনায়তনে ফজলে হাসান আবেদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আবেদ ভাই যখন লেখাপড়া শেষ করে বিলেত থেকে আসলেন ১৯৭০ সালে, ওনার জীবনে একটি বড় ধাক্কা আসলো। তিনি পাকিস্তানের একটি খুব বড় কোম্পানিতে অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ে চাকরি নিলেন। যেখানে তিনি বড় অফিসার ছিলেন। গাড়ি-বাড়ি, টাকা-পয়সার অভাব ছিল না। অত্যন্ত আরাম-আয়েশের জীবন ছিল তার।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ১৯৭০ সালে একটি প্রলয়ংকরী ঝড় হলো। সেখানে লাখো লোক মারা গেলো। তখন মনপুরাতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। আবেদ ভাই সেখানে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে যান। তিনি এই প্রথম বাংলাদেশের দারিদ্র্য দেখে চমকে ওঠেন। এই ঘটনা তার জীবনে একটা পরিবর্তন এনে দেয়। তিনি মনে করেন এতে টাকা-পয়সা দিয়ে কী হবে? দেশ যদি ভালো না হয়।

এর পরের বছর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। তখন তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে বিলেতে চলে যান। বিলেতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করেন। অ্যাকশন বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠন করেন এবং সেখানে সার্বক্ষণিক সময় দেন। বিলেতের এমপিদের তদবির করেন। আবু সাঈদ চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের দুঃখের কাহিনী, আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কাহিনী সারাবিশ্বে পরিচয় করান। আমি বলব— বঙ্গবন্ধুর পাকিস্তান কারাগার থেকে জীবিত ফিরতে পারার মূল কাজটি করেছিলেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ও আবেদ ভাইরা।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, বিজয় দিবসের পরে আবেদ ভাই ভাবলেন দেশটাকে গড়তে হবে। তখন আমাদের অত্যন্ত অভাব-অনটন, দুঃখ-দুর্দশা ও দারিদ্র্য ছিল। তখন তিনি বাংলাদেশ রুরাল অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিটি গঠন করলেন। অর্থাৎ বাংলাদেশকে গড়ে তোলার জন্য ব্র্যাক। তিনি বুঝেছিলেন, আমাদের প্রাণ হলো গ্রাম। তাই তাদের (গ্রামের মানুষ) জন্য তিনি কাজ করেছেন এবং তাদের লেখাপড়া করার জন্য যা দরকার সেই দিকে তিনি বেশি নজর দিয়েছেন। তখনও আমাদের দেশে মাত্র কয়েক শতাংশ লোক নাম লিখতে পারতেন। তাই আজকে আমাদের আবেদ ভাইকে ভুলে গেলে চলবে না। তাকে মনে রাখতে হবে এবং তার আদর্শ ও কর্মে অনুপ্রাণিত হতে হবে।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, সভা পরিচালনা করেন গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টারের স্বমন্বয়কারী ডা. মহিবুল্লাহ খন্দকার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২০
পিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।