ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লেবেল ক্রসিং খোলা রেখেই ট্রেন পারাপার!

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২০
লেবেল ক্রসিং খোলা রেখেই ট্রেন পারাপার!

পাবনা (ঈশ্বরদী): জয়পুরহাটে লেবেল ক্রসিং গেটে মর্মান্তিক ট্রেন-বাস দুর্ঘটনার দুই দিন পার না হতেই এবার ঈশ্বরদীতে বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল শতাধিক বড় ছোট যানবাহন।

রোববার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে গেট খোলা রেখেই ঢাকা থেকে খুলনাগামী আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেসসহ অপর একটি আন্তনগর এক্সপ্রেস ট্রেনকে পারাপার করার সময় এ ঘটনা ঘটে।

তখন গেট খোলা থাকায় ব্যস্ততম শহরের কয়েকশ’ যাত্রীবাহীসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন রেলগেট দিয়ে চলাচল করছিল। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রেলওয়ে বেরিয়ার ছাড়া ট্রেন চলাচল করছে।    

জানা যায়, ঘটনার সময় ঈশ্বরদী শহরের রেলগেট মোড়ের রেলগেট দিয়ে দুপুরে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি রেলগেট অতিক্রমকালে সুইচ কেবিন থেকে গেট বন্ধ করার জন্য সংকেত দেওয়া হয়। তখন রেলগেটে গেটকিপার হিসেবে দুই নারী দায়িত্বে ছিলেন। তারা তাড়াহুড়ো করে গেটের ব্যারিয়ার স্ট্যান্ড নামাতে গিয়ে ইন্টারলকিং সুইচটি বিকল করে ফেলেন। ফলে স্ট্যান্ডটি আর নিচে নামানো সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি বুঝতে না পেরে রেলগেট দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীবাহীসহ সকল ধরনের যানবাহন চলাচল অব্যহৃত রাখে। এ সময় অবস্থার বেগতিক দেখে ট্রেনের চালক বারবার হুইসেল দেয়। তখন রাস্তায় দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ ও রেলগেট এলাকার দোকানদাররা গেটের দুই পাশের দাঁড়িয়ে পথ আটকে দেয়। আর দুই মহিলা গেট কিপার হাতে সবুজ পতাকা নিয়ে ট্রেন পারপারের সংকেত দেন।  

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈশ্বরদীর রেলগেটের মতো জায়গায় সচেতন ও দক্ষ গেটকিপার থাকা প্রয়োজন। কয়েকদিনই প্রায় ট্রেন চলাচলের সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। যোগদানের পর থেকেই দায়িত্বে অবহেলা করছেন তারা। সারাক্ষণ তারা মোবাইল হাতে নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।  

এ বিষয়ে কেউ কথা বললে ‘চড়াও’ হন। নারী হওয়ার কারণে ভয়ে কেউ কথা বলতে চাই না।  

ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ট্রাফিক সাব ইন্সপেক্টর খাইরুল আলম বাংলানিউজকে জানান, ঈশ্বরদীর রেলগেট শহরের একটি ব্যস্ততম জায়গা। যখন গেট বন্ধ হয় দুইপাশে চরম যানজট সৃষ্টি হয়। সারাদিনে অন্ততপক্ষে ১৫-২০টি ট্রেন যাতায়াত করে। ট্রেন আসার সিগন্যাল পেলে সরাসরি গেট বন্ধ করে দিলে আর কোন সমস্যা হতো না। দুই একটি গাড়ি পার করতে গিয়ে এ সমস্যা সৃষ্টি। গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। দক্ষ কোনো গেটকিপার দিলে ভালো হয়।  

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশি বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে জানান, তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে রেলওয়ের দায়িত্বরত কর্মচারী গেটের বেরিয়ারটি মেরামত করার চেষ্টা করছে। তারা মুলত প্রকল্পের অস্থায়ী গেটকিপার। তবে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাকশি বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহীদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, শহরের রেলগেটটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এই স্থানে দক্ষ ও সচেতন কোনো গেটকিপার রাখা যায় কি না বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবো।

বাংলাদশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।