ঢাকা, রবিবার, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৮ জুলাই ২০২৪, ২১ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেটে অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের ধর্মঘট, দুর্ভোগ চরমে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২০
সিলেটে অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের ধর্মঘট, দুর্ভোগ চরমে অটোরিকশার জন্য অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: গ্রিল লাগানো বাতিলসহ ৫ দফা দাবিতে সিলেটে সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘট চলছে। সোমবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে থেকে রাস্তায় নামেনি সিএনজি অটোরকিশা।

এ কারণে সিলেটের লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আর অটোরিকশা চলাচল না করায় সুবিধা নিচ্ছেন রিকশাচালকরা। ১০/২০ টাকার ভাড়া ৫০ টাকা, দূরত্ব বুধে একশ’/দেড়শ’ টাকাও দাবি আদায় করছেন। পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে চলাচল করতে দেখা গেছে।

সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাকারিয়া আহমদ বলেন, ঢাকা চট্টগ্রাম ছাড়া অধিকাংশ জেলায় সিএনজিতে গ্রিল নেই। গ্রিল সংযোজনের সিদ্ধান্ত বাতিল নিয়ে একটি মীমাংসিত বিষয়। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল আব্দল মুহিতের সঙ্গে আলাপ করে বিগত দিনে বিষয়টি মীমাংসা করেছি। সেসময় সিদ্ধান্ত হয় অন্যান্য জেলায় গ্রিল লাগানো হলে সিলেটেও তা বাস্তাবায়ন করা হবে। এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে। তিনিও আমাদের পাশে আছেন। কিন্তু প্রশাসন পাশে নেই। মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও বন্ধ করা হচ্ছে না।

তিনি বলেন, গাড়ি পাকিংয়ের জায়গা নেই। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করতে হয়। বছর শেষে আমরা ট্যাক্স দিচ্ছি। কিন্তু আমাদের এই সেবাটুকু নিশ্চিত করতে ব্যর্থ কর্তৃপক্ষ।

দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের অধীনে অর্ধলাখ শ্রমিক রয়েছে। আঞ্চলিক পরিবহন কমিটিতে আমাদের সংগঠনের কোনো প্রতিনিধি না থাকায় আমাদের দাবি উত্থাপনের সুযোগ হয় না।

আঞ্চলিক পরিবহন কমিটিতে আমাদের সংগঠনের প্রতিনিধি দিতে হবে। মেট্রোসিটির আওতাধীন মহাসড়কগুলোতে গাড়ি চালানোর অনুমতি দিতে হবে। অটোরিকশা বন্ধ করতে হবে। দাবি আদায় না হলে আগামী ২৩ ডিসেম্বর সভা শেষে সিলেট মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সিলেট নগরের প্রবেশদ্বার টুকেরবাজার, টিলাগড়, চন্ডিপুল, হুমায়ন রশিদ চত্বর থেকে লোকজন রিকশাযোগে সিলেট শহরে যাতায়াত করছেন। নগরের অভ্যন্তরেও রিকশায় ভরসা করে যাত্রীরা চলাচল করতে দেখা গেছে।  

এছাড়া জিতু মিয়ার পয়েন্ট, তালতলা, বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা থেকে অনেকে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে দেখা যায়। তবে প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসা-বাড়ি থেকেও বের হচ্ছেন না।  

সিলেট নগরের হক সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী শামীম আহমদ বলেন, সিএনজি অটোরিকশার চলাচল না থাকায় নগরের মীরের ময়দান পয়েন্ট থেকে জিন্দাবাজার পর্যন্ত রিকশায় ২০ টাকার ভাড়া ২০ টাকা দাবি করছে। তাই পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিতে হয়েছে। একইভাবে ভোগান্তিতে পড়া লোকজন পায়ে হেঁটে কিংবা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিকশায় যাতায়াত করছেন।

এদিকে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার দিন ধার্য ছিল সোমবার। কিন্তু সিএনজি অটোরিকশার ধর্মঘট থাকায় শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের বিপাকে পড়তে হয়েছে।

এ বিষয়ে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবীর খান বাংলানিউজকে বলেন, ধর্মঘটের কারণে শিক্ষার্থীরা আসতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়া বাতিল করা হয়েছে। অবশিষ্ট অ্যাসাইনমেন্ট জমা না নিয়ে আগামী ২৩ ডিসেম্বর ইতোপূর্বে বিলি করা পেপার জমা দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ক্ষুদে বার্তা পাঠানো করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২০
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।