যশোর: যশোর শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঐতিহ্যবাহী লালদীঘি পুকুরপাড়ে ১০ তলাবিশিষ্ট মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। নির্মাণ কাজে লালদীঘি পাড়ের একাংশ মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে গত ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিভুক্ত (বেলা) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাঈদ আহমেদ কবীর শহরের লালদীঘি পুকুর ভরাট করে ভবন নির্মাণ আইনবিরুদ্ধ উল্লেখ করে তা অপসারণের জন্যে তিনটি মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও যশোর পৌর কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দিয়েছেন। সুপ্রীম কোর্টের পাঠানো ওই নোটিশ গত সোমবার (২১ ডিসেম্বর) পৌর কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছেছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, সম্প্রতি পৌরসভার বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে দিঘীটি ভরাট করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দিঘীর ৩০ শতাংশ ভরাট করা হয়ে গেছে। দিঘীর উত্তরপার্শ্ব দখল ও ভরাট করে নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বেলা প্রতিনিধি ইতিমধ্যে সরেজমিনে পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পেয়েছে। এ অবস্থায় যশোরের লালদিঘী নামক দিঘীর ভরাট কার্যক্রম বন্ধ ও ভরাটকৃত অংশে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদপূর্বক তা পুনরুদ্ধার করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) লালদিঘীপাড়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পৌর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে লালদিঘীর পাড়ে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। স্থাপনা নির্মাণ অংশ টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। বর্তমানে মাটি ফেলা না হলেও শুরুর দিকে মাটি ফেলে কিছু অংশ ভরাট করা হয়।
এনিয়ে পৌরসভার মেয়র বলেন, পাইলিং যন্ত্র রেখে কাজ করার জন্যে কয়েক ট্রাক মাটি ফেলা হয়েছে। যা পাইলিং কাজ শেষ হলে আবার তুলে ফেলা হবে। যদিও সেই মাটি এখনো তুলে ফেলা হয়নি।
যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, লালদিঘী সংক্রান্ত বেলা থেকে ওই নোটিশ পাওয়ার পরে যশোর পৌরসভার মেয়রকে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রায় ২০০ বছর আগে যশোর শহরের গাড়িখানা সড়কের পাশে পৌরসভার উদ্যোগে এক একর ১২ শতাংশ জমিতে ওই দীঘি খনন করা হয়। এখনো এলাকার বহু মানুষ গোসলসহ নানা কাজে ওই দীঘির পানি ব্যবহার করেন। কয়েক বছর আগেও দীঘিটি ভরাট করে পৌর কর্তৃপক্ষ মার্কেট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে অবশ্য ওই সিদ্ধান্ত বাতিল হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২০
ইউজি/জেআইএম