নাটোর: ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত অর্থনীতির ২৫টি দেশের একটি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বের) সকাল ১১টার দিকে নাটোরের সিংড়া উপজেলার মাঝগ্রাম এলাকায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বাড়ি নির্মাণ কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় পলক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হতো। কিন্তু ১৯৭১ এর পরাজিত শক্তিরা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে রুখে দিতে চেয়েছিল। আজও তারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু তাদের সেই ষড়যন্ত্র আর কোনো দিন সফল হবে না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের শুধু বিজয়ই উপহার দেননি, দেশের মেহনতি মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের মাধ্যমে সুখী সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন। আমাদের সংবিধানে সংযোজিত দেশের সব মানুষের গৃহ নির্মাণসহ পাঁচটি মৌলিক চাহিদা পূরণের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেন বঙ্গবন্ধু। আজ তারই বাস্তবায়ন করছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সারাদেশে তিনি নয় লাখ গৃহহীন পরিবারকে আধাপাকা ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু জন্মশত বার্ষিকীতে এসব পরিবারের তালিকা প্রণয়ন করে পর্যায়ক্রমে তাদের ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে। এ কাজ শেষ হলে দেশে কোনো পরিবার আর গৃহহীন থাকবে না।
করোনাকালে উন্নত অনেক দেশের অর্থনীতি বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্বে শুধু করোনা সংকটই নয়, বন্যা পরিস্থিতিও মোকাবিলা করা হয়েছে। বর্তমানে আমাদের অর্থনীতি অনেক সমৃদ্ধ। আশা করা হচ্ছে, আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নত অর্থনীতির ২৫টি দেশের একটি হবে।
এসময় প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পূর্ণ করতে কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন করে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে সব ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করার কার্যক্রম শুরু করেছেন। পর্যায়ক্রমে দেশের নয় লাখ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। মুজিব শতবর্ষে সারাদেশে এক হাজার ১৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৫ হাজার ৭২৬টি গৃহ নির্মাণ কাজ এখন শেষের পথে, আগামী ১৫ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে এসব ঘর হস্তান্তর করা হবে।
এসময় নাটোরের জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ বলেন, সরকারের নির্দেশিত নীতিমালার আলোকে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কমিটির মাধ্যমে সুফলভোগীদের তালিকা করা হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন-আল-ওয়াদুদ বলেন, মুজিব শতবর্ষে জেলায় প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৫৫৮টি বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে সব বাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ হলে জমিসহ উপকারভোগীদের হাতে বাড়ির চাবি হস্তান্তর করা সম্ভব হবে।
নির্মাণাধীন এসব ঘর পরিদর্শন শেষে প্রতিমন্ত্রী মাঝগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শীতার্তদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন। জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজের সভাপতিত্বে এক হাজার চারশ’ শীতার্তের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী পলক। এসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২০
এসআই