ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী: সহিদুল্লাহ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২১
পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী: সহিদুল্লাহ পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা: পাটকল বন্ধ করায় পাটপণ্যের চাহিদা পূরণ ও রপ্তানির সুযোগ হাতছাড়া হলে, তা কর্মসংস্থান, শিল্প, অর্থনীতি ও জাতির জন্য আত্মঘাতী হবে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি, পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সহিদুল্লাহ চৌধুরী।

সোমবার (৪ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সহিদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘করোনা ভাইরাস মহামারির ফলে সারা বিশ্বের অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়েছে। আমাদের বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কর্মহীন হয়েছে। এসএমই শিল্পে এক তৃতীয়াংশ শ্রমিক কর্মহীন হয়েছে। গার্মেন্টস খাতের উৎপাদন পুরোদমে হয়নি। ফলে অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে। আপনারা জানেন, রাষ্ট্রীয় সম্পদের বেশিরভাগ এখন পাঁচটি মেঘা প্রকল্পে নিয়োজিত। যেসব প্রকল্পে তিন লাখ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে; কিন্তু সেখানে মাত্র দেড় হাজার লোকের কর্মসংস্থান আছে। নতুন কোনো কলকারখানা হচ্ছে না। কর্মসংস্থানের কোনো সুযোগ আর দেশে নাই। এরকম একটা পরিস্থিতিতে পাটকলগুলো বন্ধ করে দেওয়া জাতির জন্য আত্মঘাতী। ’

তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে সারা বিশ্বে অনেক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু করোনা বাংলাদেশের পাটশিল্পের জন্য আশীর্বাদ হয়ে আসছিল। করোনা পরবর্তীকালে পাটজাত পণ্যের চাহিদা যে পরিমাণ বেড়েছে, তা উৎপাদন এবং সরবরাহের সক্ষমতা একমাত্র বাংলাদেশের রয়েছে। এটা আমাদের বিরাট এক সম্ভাবনার জায়গা ছিল। এমন সময় পাটকলগুলো বন্ধ করে দেওয়া জাতির জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। ’

প্রখ্যাত এ শ্রমিক নেতা বলেন, ‘জুলাই মাস থেকে রাষ্ট্রীয় পাটকলগুলো বন্ধ। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল তিন মাসের মধ্যে তারা কারখানাগুলো চালু করবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কারখানা চালুর কোনো শব্দ নেই। তারা কী করছেন দেশবাসী জানে না। এত বড় একটি জাতীয় শিল্প বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সেটা দেশবাসী জানবে না, এর চেয়ে দুঃখের কিছু নেই। আমরা চাই এ বিষয়গুলো দেশবাসী জানুক এবং দেশবাসী সিদ্ধান্ত নিক তারা কী করবেন। বর্তমানে একমাত্র পাটশিল্পে ৬ মাসে দেড় লাখ লোকের কর্মসংস্থান করা সম্ভব। পাটপণ্য বর্তমানে ৯ হাজার কোটি টাকা রপ্তানি হয়। এক বছরের মধ্যে বার্ষিক ২০ হাজার কোটি টাকার পাটজাত পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব। ’

সংবাদ সম্মেলনে পাটকল বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি আধুনিকায়ন করে পাটকল চালুর সুপারিশ করায়, তাদের ধন্যবাদ জানান হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে পাটকল চালুর জন্য, চীনের সরকার প্রস্তাবিত এমওইউর ভিত্তিতে পাটকল আধুনিকায়ন অথবা শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) প্রস্তাবিত ১২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল আধুনিকায়ন ও চালুর আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল আহসান। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক মছিউদ্দৌলা, আসলাম খান, আবুল কালাম আজাদ, মো. আনোয়ার, কিশোর রায়সহ নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে দেশব্যাপী আন্দোলন অব্যাহত রাখা এবং আগামী ২৪ জানুয়ারি গণঅভ্যুত্থান দিবসে এতে পাটকল শ্রমিকদের ভূমিকা বিষয়ে আলোচনা সভার ঘোষণা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০২১
আরকেআর/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।