ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মহিপালের উড়ালসেতু দেশবাসীর জন্য আশীর্বাদ

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২১
মহিপালের উড়ালসেতু দেশবাসীর জন্য আশীর্বাদ

ফেনী: ফেনীর মহিপালে দেশের প্রথম ও একমাত্র ছয় লেন উড়ালসেতুর (ফ্লাইওভার) উপকার পাচ্ছেন পুরো দেশবাসী। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে যানজট লেগেই থাকতো।

শহরের এ স্থানটিকে বলা হতো ফেনীর বিষফোড়া। উড়ালসেতুর কারণে সেই বিষফোড়া থেকে মিলেছে স্বস্তি।
 
সোমবার (৪ জানুয়ারি) মহিপালে দেশের প্রথম ও একমাত্র ছয় লেন উড়ালসেতুর তিন বছর পূর্ণ হলো।

বৃহত্তর নোয়াখালী ও পার্বত্য জেলাগুলোর সংযোগস্থল ফেনীর মহিপাল। এ স্থানে উড়ালসেতুটির কারণে এ জনপদের যোগাযোগে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য।

রাজধানী ঢাকার সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপালে চর্তুমুখী সংযোগের কারণে এখানে যানজট ছিল নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। এ যানজটের কারণে যানবাহন ও পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হতো। এতে মানুষের সময় নষ্টসহ পণ্যবাহী যানবাহনের কাঁচামালের ব্যাপক ক্ষতি হতো। এসব সমস্যা নিরসনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপালে দেশের একমাত্র ও প্রথম ছয় লেনের উড়ালসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালের ১ এপ্রিলে। ২০১৮ সালের ০৪ জানুয়ারি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উড়ালসেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনচালক ও যাত্রীরা জানান, এ উড়ালসেতু নির্মাণের ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়িগুলো দ্রুত গন্তব্যে চলে যাচ্ছেন। বর্তমানে নেই কোনো যানজট। এতে সময় যেমন সাশ্রয় হয়েছে, তেমনি মানুষের ভোগান্তি  ও অনেক কমে গেছে। অপরদিকে ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামগামী ছোট পরিবহন চলাচলের পাশাপাশি মহিপাল হয়ে বৃহত্তর নোয়াখালী ও পার্বত্য জেলাসহ অন্যান্য দূরপাল্লার গাড়িগুলো চলাচল করছে যানজট ছাড়াই।

মহিপালে ছয়লেন উড়ালসেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৮১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। উড়ালসেতু মূল দৈর্ঘ্য ৬৬০ মিটার, প্রস্থ ২৪ দশমিক ৬২ মিটার, সার্ভিস রোডের দৈর্ঘ্য এক হাজার ৩৭০ মিটার, সার্ভিস রোডের প্রস্থ ৭ দশমিক ৫ মিটার, সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ১৬০ মিটার, ১১টি স্প্যান, ফুটপাতের দৈর্ঘ্য ২ হাজার ২১০ মিটার, পিসি গার্ডার ১৩২টি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৯ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্যাটালিয়নের তত্ত্বাবধানে মহিপাল উড়ালসেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়।  

ফেনী পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, ‘এ উড়ালসেতুটি শুধু মহিপাল নয় পুরো দেশবাসীর জন্য আশীর্বাদ। এর উপকার পাচ্ছে পুরো দেশবাসী। সেতুটির জন্য ফেনীবাসী বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবে।  

কবির আহম্মদ নামে ফেনী শহরের মহিপাল এলাকার এক বাসিন্দা জানান, এ স্থানটিতে এক সময় যানজট লেগেই থাকতো। মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিল না। এ ফ্লাইওভারটির কারণে মানুষ সে ভোগান্তি থেকে রেহাই পেয়েছে।  

ফেনী মহিপাল হাইওয়ে থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এখানে প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকতো। দুর্ঘটনা হতো, দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু হতো। কিন্তু ছয় লেন উড়ালসেতু হওয়ার পরে এখন তা আর হচ্ছে না। আমাদের এখানে দুর্ঘটনার হার কমে গেছে। মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে তার গন্তব্য পৌঁছাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০২১
এসএইচডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।