ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খিলক্ষেতে মা-মেয়ে নিখোঁজ, কারণ খুঁজছে পুলিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২১
খিলক্ষেতে মা-মেয়ে নিখোঁজ, কারণ খুঁজছে পুলিশ

ঢাকা: রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় মা-মেয়ে একইসঙ্গে নিখোঁজ হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিখোঁজ দুইজন হলেন মা ফাতেমা আক্তার আঁখি (২২) ও তার ছয় বছরের মেয়ে আতিফা রহমান আয়াত।

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর খিলক্ষেতের উত্তরপাড়া এলাকা থেকে নিখোঁজ হয় মা ও মেয়ে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) নিখোঁজ ফাতেমা আক্তার আঁখির মামা আবদুল কাইয়ুম ও দেবর মতিউর রহমান খিলক্ষেত থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

এদিকে পুলিশ বলছে, বিষয়টি তদন্তাধীন। তারা নিখোঁজ হয়েছেন? নাকি স্বেচ্ছায় কোথাও গিয়েছেন সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে নিখোঁজ আঁখির মামা আবদুল কাইয়ুম বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আঁখি তার মেয়েকে টিউশন টিচারের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন বলে বাসা থেকে বের হয়। এসময় আয়াতের একটি স্কুল ব্যাগ এবং আঁখির ভ্যানিটি ব্যাগ ছিল। তারা বের হওয়ার ছয় ঘণ্টা পরে আঁখির শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের ফোন দিয়ে রাত ১০টায় জানান আঁখি ও আয়াতকে তারা খুঁজে পাচ্ছেন না। পরে আঁখি ফোন নাম্বারে বার বার কল দিয়ে বন্ধ পান।

তিনি বলেন, আঁখির স্বামী জিল্লুর রহমান (৩৩) সৌদিপ্রবাসী। আঁখি তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে উত্তরখানে নামাপাড়া এলাকায় থাকতেন। গত ৬ মাস আগে ওমর ফারুক নামে এক যুবক আঁখির ফেসবুক আইডি হ্যাক করেন। তিনি আঁখির আইডি থেকে তার স্বামীর কাছে পাঠানো অনেক স্পর্শকাতর ছবি নিয়ে নেন। পরে এসব ছবি দেখিয়ে আঁখিকে বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকেন। ওমর ফারুক কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের কৈইয়া গ্রামের বাসিন্দা বলে আমরা জানতে পেরেছি।

তিনি আরও বলেন, আঁখি এসব বিষয়ে আমাকে জানায়। এরপর আমরা আইডি হ্যাকের বিষয়ে খিলক্ষেত থানায় একটি জিডি করেছিলাম। এরপর ওমর ফারুক নামে ওই ব্যক্তি  আঁখিকে আর ব্ল্যাকমেইল করতেন না বলে আমাকে জানায়। কিন্তু জিডি দায়েরের মাসখানেক পর আবারও ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করেন। তার কাছে নানা অঙ্কের টাকা চায়। না দিলে এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে আঁখি ভয় পেয়ে ওমর ফারুকের বিভিন্ন আবদার মেটাতে থাকেন। যেহেতু আঁখির স্বামী তার নামে করা একাউন্টে টাকা পাঠাতো তাই সে সহজেই সবাইকে না জানিয়ে ওমর ফারুকের ব্ল্যাকমেইলে এ বাধ্য হয়ে তাকে টাকা দিতেন বিকাশে। আঁখি নিখোঁজ হওয়ার পর তার এক ভাগিনার মাধ্যমে আমি জানতে পারি, আঁখি প্রতিমাসে ওমর ফারুককে টাকা পাঠাতো, সর্বশেষ তিনি তাকে ২০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়েছেন ওই ভাগিনার মাধ্যমে।

এ বিষয়ে খিলক্ষেত থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি রহস্যজনক। তিনি বাড়িতে বলে বের হয়েছেন। তার মানে তিনি কারো সঙ্গে কথা বলে ঘর থেকে বের হয়েছেন। কিন্তু ওমর ফারুক নামে একটি ছেলের কথা তার পরিবার বলছেন এবং তাকে আঁখি প্রতিমাসে টাকা দিতেন সেটাও পরিবার বলছে। এছাড়া পরিবারের কাছ থেকে আমাদের একটা বিকাশ নাম্বার দেওয়া হয়েছে যে, নাম্বারে আঁখি টাকা পাঠাতেন।

তিনি বলেন, আমরা এখন তদন্ত করে দেখছি ওমর ফারুকের ব্ল্যাকমেইলের কারণে বা অন্য কোনো অপরাধের শিকার হয়ে আঁখি ও তার মেয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। নাকি পূর্ব কোনো সম্পর্কের জের ধরে আঁখি স্বেচ্ছায় পালিয়ে গেছেন। তদন্ত শেষ বিস্তারিত বলা যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২১
এসজেএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।