ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বিশেষ কর সুবিধা সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহী করে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২১
বিশেষ কর সুবিধা সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহী করে

ঢাকা: বিশেষ কর সুবিধার সুফল নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেন্ট্রার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, এ ধরনের সুবিধা সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত করে। বিশেষ কর সুবিধা সত্যিই অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক কিনা, এই বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে গবেষণা করার পরামর্শ দেন তিনি।

মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ আয়োজিত ‘কালো টাকা সাদা হচ্ছে: অর্থনীতির লাভ, না ক্ষতি?’ শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল সংলাপে তিনি একথা বলেন।

অপ্রদর্শিত আয় বৈধ হবার ফলে দেশের অর্থনীতির কি প্রকৃতপক্ষে লাভ হচ্ছে, না লাভের চাইতে ক্ষতি বেশি হচ্ছে তা নিয়েও নানা দৃষ্টিভঙ্গি উঠে আসে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, কালো টাকা সাদা করার প্রক্রিয়া নিয়ে বিধি ব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন  সামাজিক অর্থনীতি তথা রাষ্ট্রের এখতিয়ার। রাস্ট্রের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ‘দুর্নীতিজাত অনুপার্জিত আয়’ এর উৎস, উপায় ও উপলক্ষ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ করা। দুর্নীতিজাত কালো টাকা লালন করার সংস্কৃতি থেকে সরে না এলে আয় ও সম্পদ বণ্টনের ক্রমবর্ধমান বৈষম্য থেকে বাংলাদেশের মুক্তি মিলবে না।

এনবিআরের সাবেক সদস্য মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, কালো টাকা আয়ের মূল কারণ হলো সুশাসনের অভাব। তিনি মন্তব্য করেন যে, কালো টাকা রোধে, রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।

আরেক সদস্য মো. আলমগীর হোসেন বলেন, অপ্রদর্শিত আয় মূলধারায় নিয়ে আসার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে।

বেশ কয়েকটি উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ কর সুবিধার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার সুবিধা দিলে সামগ্রিক অর্থনীতির উন্নয়নে সাহায্য করবে।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান ও কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বর্তমান কালো টাকা সাদা করার সুযোগের থেকে সৎভাবে কর দেওয়া বেশি ব্যয়বহুল। এই সুযোগের কারণে মানুষ সৎভাবে কর দিতে নিরুৎসাহিত হতে পারে।

কালো টাকা সাদা করার উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ বলে মত দেন মাল্টিমুড গ্রুপের পরিচালক তাবিথ আউয়াল। দি ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এর বিশেষ প্রতিনিধি দৌলত আকতার মালা কর কর্মকর্তাদের সদিচ্ছা ও সক্ষমতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত সিনহা মনে করেন, এই পরিস্থিতির সমাধান পেতে রাজস্ব বোর্ডের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সক্ষমতা বৃদ্ধি জরুরি।

জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, রাজস্ব ও কর বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, বাবসায়ীদের প্রতিনিধি এবং অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা এই ভার্চ্যুয়াল সংলাপে অংশ নেন এবং তাদের মতামত ও মন্তব্য তুলে ধরেন। এছাড়াও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সহযোগী প্রতিষ্ঠানসহ এনজিও প্রতিনিধি, সমাজকর্মী, পেশাজীবী এবং গণমাধ্যমকর্মীসহ নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এই সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২১
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।