বগুড়া: সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (এসআইবিএল) ৩১ কোটি টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বগুড়া পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বগুড়ার স্পেশাল জজ আদালতে ওই মামলার চার্জ গঠনের দিন নিয়ম অনুযায়ী হাজির না থাকায় বিচারক এমরান হোসেন চৌধুরী তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) আব্দুল মান্নান আকন্দকে আওয়ামী লীগের পৌর কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা জানানো হয়। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে অসম্মান করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দলীয় ওই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান বগুড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন।
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ‘জগ’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আব্দুল মান্নান আকন্দ। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বগুড়া পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু ওবায়দুল হাসান ববি। অন্যদিকে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির জেলা কমিটির সাবেক সাবেক রেজাউল করিম বাদশা। অপর প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আব্দুল মতিন হাতপাখা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বগুড়া স্পেশাল জজ আদালতে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউর আবুল কালাম আজাদ জানান, ২০০৮ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে পরবর্তী তিন বছরে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের বগুড়া শাখায় তৎকালীন তিন কর্মকর্তা এবং ৬ ব্যবসায়ীসহ ৯ জন মিলে ভুয়া ঋণ হিসাব খুলে ৩১ কোটি ১৯ লাখ ৪৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। ওই ঘটনায় এসআইবিএলের বগুড়া শাখার সেই সময়ের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০১১ সালে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলাটি দুদক তদন্ত করে এবং ২০১৭ সালে মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে।
চার্জশীটভুক্ত আসামীরা হলেন- এসআইবিএলের সাবেক ব্যবস্থাপক (বর্তমানে বরখাস্ত) রফিকুল ইসলাম, সাবেক ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (বর্তমানে বরখাস্ত) আতিকুল কবির, সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার (বর্তমানে বরখাস্ত) মাহবুবুর রহমান, ব্যবসায়ী আকতার হোসেন মামুন, জহুরুল হক মোমিন, এনামুল হক বাবু, মাকসুদুল আলম খোকন, ফেরদৌস আলম এবং বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শুকরা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মান্নান আকন্দ।
দুদকের পিপি আবুল কালাম আজাদ জানান, ওই মামলায় ২৪ ফেব্রুয়ারি চার্জগঠনের দিন ধার্য ছিল। নিয়ম অনুযায়ী চার্জ গঠনের দিন সকল আসামীকে আদালতে হাজির থাকতে হয়। কিন্তু ওইদিন ৯ আসামীর মধ্যে জামিনে থাকা ৭জন এবং কারাগারে আটক জহুরুল হক মোমিন আদালতে হাজির থাকলেও আব্দুল মান্নান আকন্দ অনুপস্থিত ছিলেন। যে কারণে বিচারক চার্জগঠন শেষে পলাতক আসামী হিসেবে আব্দুল মান্নান আকন্দের বিরুদ্ধে প্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১
জেআইএম