ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণে তহবিল গঠন তিস্তাপাড়ের মানুষের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১১ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২১
স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণে তহবিল গঠন তিস্তাপাড়ের মানুষের বাঁধ নির্মাণে তহবিল গঠনে সভা। ছবি: বাংলানিউজ

লালমনিরহাট: তিস্তার কড়াল গ্রাস থেকে নিজেদের ফসলি জমি আর বসতভিটা রক্ষায় স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করতে তহবিল গঠন শুরু করেছেন লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের মানুষ।  

শুক্রবার (৫ মার্চ) বিকেলে আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সভা শেষে তহবিল গঠন শুরু করেন তারা।

আয়োজকরা জানান, ভারতের সিকিমে সৃষ্ট তিস্তা নদী জন্মলগ্ন থেকে খনন না করায় বালু জমে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদী ফুলে ফেঁপে ওঠে। কিনার উপচিয়ে লোকালয়ে বন্যা সৃষ্টি করে ফসলহানিসহ অসহনীয় দুর্ভোগে পড়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ। এছাড়াও তিস্তার হিংস্র স্রোতে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে প্রতি বছর হাজার হাজার বসতভিটা আর একরের পর একর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে। নদী ভাঙন আর বন্যার কবলে পড়ে প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তিস্তাপাড়ের লাখো মানুষ।  

তলদেশ ভরাট হওয়া তিস্তা নদী খনন করে দুই তীরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে ক্ষতিগ্রস্ত এসব ছিন্নমুল মানুষ। প্রতি বছর বর্ষাকালে সরকার বাঁধ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি তিস্তাপাড়ের মানুষের। সরকার আসে সরকার যায়। কোনো সরকার তিস্তাপাড়ের মানুষের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসেনি। তবে বর্তমান সরকার তিস্তা ঘিরে মহাপরিকল্পনার ঘোষণা দিলেও বাস্তবে তার অগ্রগতি না দেখে হতাশ তিস্তাপাড়বাসী।  

নিজেদের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সরকারের উপর ভরসায় না থেকে নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করতে আলোচনা সভার আয়োজন করে তিস্তাপাড়ের ছিন্নমূল মানুষ।  

স্থানীয় মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ওই ইউনিয়নের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী, সমাজকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানরা অংশগ্রহণ করেন। যার যতটুকু সামর্থ্য রয়েছে তিনি ততটুকু সহায়তা দিয়ে মহিষখোচা ইউনিয়নের উজানে কুটিরপাড়ে ৫শ মিটার বালুর বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে সিদ্ধান্ত নিয়ে তহবিল গঠন শুরু করেন তারা। তহবিলের সিংহভাগ ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী দেওয়ার প্রতিশ্রুত দেন। আর্থিক সহায়তা দিতে অক্ষমরা শারীরিক পরিশ্রম করে বাঁধ নির্মাণে সহায়তা করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তিস্তাপাড়ের মানুষ। খুব দ্রুত এ বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ শুরু করা হবে। বাঁধটি নির্মাণ ও রক্ষা করা সম্ভব হলে পুরো মহিষখোচা ইউনিয়নকে নদী ভাঙন থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে স্থানীয়দের দাবি।

নদী ভাঙন রোধে কুটিরপাড় বেড়িবাঁধ নির্মাণ তহবিলে সর্বস্তরের মানুষের সহায়তা কামনা করেন আয়োজক তিস্তাপাড়ের ছিন্নমূল মানুষ।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।