হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধা কেবিনের দরজা ভেঙে বীরেশ দাশ (৬৫) নামে একজন মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি করে ছেলে বাসায় চলে যাওয়ায় রাতে কেবিনটিতে তিনি একাই ছিলেন।
বুধবার (১৭ মার্চ) সকালে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করেছে। বীরেশ দাশ জেলা শহরের শ্যামলী এলাকার বাসিন্দা। মরদেহটি উদ্ধারের সময় তার নাক ও মুখ রক্তাক্ত ছিল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ১১টায় বীরেশ দাশকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার ছেলে বিজয় দাশ। তখন হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি করেন। ভর্তির পর মুক্তিযোদ্ধা কেবিনে বাবাকে রেখে বিজয় বাসায় চলে যান।
বুধবার সকালে একজন নার্স কেবিনের দরজায় ডাক দিয়ে ভেতর থেকে সাড়া পাচ্ছিলেন না। কিছুক্ষণ পর হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে মেঝেতে মরদেহ দেখতে পান। মরদেহের নাক-মুখ রক্তাক্ত ছিল। মেঝেতেও রক্ত লাগানো ছিল।
হাসপাতালে কর্মরত একজন চিকিৎসক বাংলানিউজকে জানান, বীরেশ দাশ হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন। রাতে অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট ছিল। ধারণা করা হচ্ছে অসুস্থ অবস্থায় তিনি শয্যা থেকে মেঝেতে পড়ে যান এবং তখনই রক্তাক্ত জখম হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, একজন গুরুতর অসুস্থ রোগীকে কেবিনে একা রেখে তার স্বজনদের চলে যাওয়া ঠিক হয়নি। একা থাকার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া শেষকৃত্যানুষ্ঠান করার জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বরাবর আবেদন করেছেন।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধার শরীরিক অবস্থা মুমূর্ষু ছিল। এজন্যই হয়তো বিছানা থেকে পড়ে রক্তাক্ত জখম হয়েছে। সবকিছু মিলিয়েই তিনি মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, চিকিৎসকেরা অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারের লোকজন তাকে নিয়ে যাননি। এরপর হাসপাতালে একা রেখে বাসায় চলে যাওয়ায় এমন হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত অমানবিক।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২১
এনটি