ঢাকা: সূর্যোদয় পেরিয়ে সূর্যাস্ত, এমনকি মধ্যরাত, তবুও রাজধানীর কোথাও কোথাও দেখা নেই গ্যাসের। আবার কোথাও কোথাও চুলা জ্বলছে নিভু নিভু।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েকদিনের মতো বৃহস্পতিবারও (২৫ মার্চ) ঢাকার অনেক এলাকায় গ্যাস নেই। সকালে চলে যায়, সারাদিন থাকে না। গ্যাসের দেখা মেলে রাত ১২টার পর। ফলে ফ্রিজের বাসি খাবার দিয়ে সারতে হয় দুপুর-রাত। অনেক সময় ফ্রিজের সে ভাত গরম করে খাওয়ার মতোও উপায় থাকে না।
জানা গেছে, রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা, ভাটারা, ছোলমাইদ, মিরপুর, মাটিকাটা, আগারগাও, মগবাজার, গাবতলী, শ্যামলী, কচুক্ষেত, মোহাম্মদপুর, বনশ্রী ও ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের তীব্র সঙ্কট চলছে। শীতের সময় গ্যাস সঙ্কট থাকলেও গ্রীষ্মের শুরুতে সেই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে শুরু করে। কিন্তু গত সোমবার (২২ মার্চ) রাজধানীর অদূরে আমিনবাজারের পাশে রাস্তা মেরামত করতে গিয়ে তিতাসের সিটি গেটের গ্যাসের পাইপলাইন ছিদ্র করে ফেলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। আর এতেই রাজধানীজুড়ে গ্যাসের সঙ্কট তৈরি হয়। যদিও তিতাস গাস কর্তৃপক্ষ বলছিল, দু’একদিনের মধ্যেই সমাধান হবে। কিন্তু চারদিন হতে চললেও সমাধান আর হয়নি।
গত তিনদিনের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় গ্যাস সঙ্কট বিরাজ করছে। এতে চরম ভোগন্তিতে পড়েছে রাজধানীর অনেক এলাকার মানুষ। কোথাও একেবারে গ্যাস নেই, কোথাও চুলা জ্বলছে নিভু নিভু। চাপ এত কম যে রান্নার উপায় নেই তো বটে, একটু চা বানানোর মতো অবস্থাও নেই।
রাজধানীর খিলবাড়ির টেক এলাকার বাসিন্দা আতাউর রহমান বলেন, সারাদিনই গ্যাস থাকে না। রাতে ১২টার আগে আসে না, আবার ভোর ৫টার দিকে চলে যায়। যে সময়ে গ্যাস আসে, সে সময় তো ঘুমানোর সময়। তাই এ গ্যাস কোনো কাজে আসে না।
মেরুল বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা দিলরুবা সুলতানা নেহা বলেন, সকাল ৮টায় ঘুম ভেঙে দেখি চুলায় নিভু নিভু আগুন। যা দিয়ে চা-ই বানানো সম্ভব না। রান্নার জন্য রাত ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আমরা বড়রা বাইরে কিছু একটা খেয়ে থাকতে পারি। কিন্তু বাচ্চাদের জন্য তো বাইরের খাবার দেওয়া যায় না। খুবই বাজে অবস্থা।
ভাটারা ঢালী বাড়ির বাসিন্দা নাসিমা বেগম বলেন, শীতের সময় সারাদিনই গ্যাস থাকতো না। অল্প কয়েকদিন ধরে পাওয়া গেলেও আবার গত তিন চার দিন ধরে গ্যাসের সমস্যা। রান্নার জন্য রাত ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। রান্না করতেই রাত আড়াইটা তিনটা বেজে যায়। খুবই বাজে অবস্থা।
তবে রাজধানীর অনেক এলাকায় গ্যাস না থাকায় রান্না বন্ধ। তাই বলেতো খাওয়া বন্ধ থাকবে না। অনেকেই অনলাইনে করছেন খাবার যোগার, আবার অনেকে রেস্টুরেন্ট থেকে কিনে আনছেন খাবার। অভিজাত এলাকায় বেড়েছে অনলাইনে খাবার অর্ডার।
ফুড পান্ডার কর্মী মোহাম্মদ মামুন বলেন, আগে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত যেখানে ৩০০-৪০০ টাকা আয় হতো, এখন সেখানে ৭০০-৮০০ টাকা আয় করছি। গ্যাস সমস্যা থাকায় অর্ডার বেড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২১
টিএম/ওএইচ/