ঢাকা: ধর্মীয় গোষ্ঠীর নারীবিরোধী প্রচারণা বন্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। জাতীয় পর্যায়ের এক ভার্চ্যুয়াল মতবিনিময় সভায় তারা নারীকে সাইবার সন্ত্রাস ও উগ্রবাদী আগ্রাসন থেকে রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইউএন উইমেন-এর সহযোগিতায় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মানবাধিকার ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট সানাইয়া ফাহিম আনসারী। সভায় বক্তব্য রাখেন ইউএন ওমেনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শোকো ইশাকাওয়া, জাপান অ্যাম্বাসির সেকেন্ড সেক্রেটারি কাজুমী সিরাহাতা, প্রফেসর ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, জোর বিশেষজ্ঞ শিপা হাফিজা, জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আইনুন নাহার, বিআইডিএস’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ, আদিবাসী নেত্রী চঞ্চনা চাকমা, উন্নয়ন কর্মী আলিফ আজিজ প্রমুখ।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার আলোকে বাংলাদেশ সরকার প্রণীত নারীর শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে বাংলাদেশে অগ্রগতি ইতিবাচক উল্লেখ করে ইউএন উইমেন প্রতিনিধি শোকো ইশাকাওয়া বলেন, প্রকৃতি ও মানব সৃষ্ট দুর্যোগে নারীর সুরক্ষার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ প্রণীত কর্মপরিকল্পনা আলোকে বাংলাদেশে জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে যেকোনো দুর্যোগ পরিস্থিতিতে নারী ইস্যুগুলো গুরুত্ব পাবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, পৃথিবীব্যাপী নানা ধরনের সহিংসতা বাড়ছে। মানুষ কোথাও জাতিগত সহিংসতার শিকার হচ্ছে, কোথাও ধর্মীয় সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এ সহিংসতার কারণে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু।
তিনি বলেন, আমরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নারীর প্রতি সহিংসতা দেখেছি। এ করোনাকালেও ঘরে-বাইরে নারীরা নির্যাতন ও বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য নারীর শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরি।
সভায় বক্তারা বলেন, দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম অনেকাংশে নারী বান্ধব নয়। বরং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দ্বন্দ্ব-সংঘাত তৈরি করছে। যার শিকার হচ্ছে নারীরা। জাতিসংঘের নির্দেশনার আলোকে যৌন নির্যাতন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা থেকে সুরক্ষা, শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠাসহ সব ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত নারী ও শিশুর পুনবার্সনের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২১
এসই/আরআইএস