ঢাকা, শুক্রবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেটে হোলি উৎসবে মাতলেন মনিপুরীরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০২১
সিলেটে হোলি উৎসবে মাতলেন মনিপুরীরা হোলি উৎসবে মাতলেন মনিপুরীরা

সিলেট: রংয়ে মিশে আছে সম্প্রীতির বন্ধন। আলতো করে সখির মুখাবয়ব রাঙিয়ে দেওয়া।

রং যেন অটুট করে বন্ধনকে। রংয়ের এই ছড়াছড়ি যেন প্রাণে দোলা দিয়ে যায় চিরদিন। নাম তার হোলি উৎসব। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে নিজেদের বন্ধনকে আরও অটুট করে নিলেন মনিপুরী সম্প্রদায়ের লোকজন।

বৃহস্পতিবার (০১ এপ্রিল) বিকাল ৫টায় করোনার কঠিন সময়েও সিলেটে সীমিত পরিসরে হয়েছে মনিপুরীদের জমকালো হোলি উৎসব। সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় সিলেটে একাডেমি ফর মনিপুরী কালচার অ্যান্ড আর্টসের (এমকা) হোলি উৎসব ও আলোচনা সভার আয়োজন করে।

নগরীর মনিপুরী রাজবাড়ি এলাকার শ্রী শ্রী মহাপ্রভু মণ্ডপে এই আয়োজনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।


 
হোলি অনুষ্ঠান পূর্ব আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, দেশে সৃষ্ট উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী আমাদের পেছনের দিকে টেনে ধরেছে। ওই গোষ্ঠী আমাদের দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করে মানুষে মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সাংস্কৃতিক জাগরণের মাধ্যমে ভয়কে জয় করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে সীমিত পরিসরে হোলি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষার্থেই এবারের আয়োজন। গত বছর আন্তর্জাতিক হোলি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠলে ভবিষ্যতে বড় পরিসরের আয়োজন অনুষ্ঠানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন আয়োজকরা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন এমকা ও গীত সুধার খুদে শিল্পীরা। উদ্বোধনী পর্ব শেষে আলোচনা সভায়ও প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

এমকার সভাপতি দিগেন সিংহের সভাপতিত্বে ও সামান্তা ঘোষের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন এমকার সাধারণ সম্পাদক জী শান্তনা দেবী।  

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন সিটি কর্পোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তনু দত্ত সনতু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি শামসুল আলম সেলিম, বাংলাদেশ মনিপুরী সাহিত্য সংসদের সভাপতি এ কে শেরাম, সিলেট সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু, সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, বাংলাদেশ মণিপুরী সাহিত্য সংসদের উপদেষ্টা ও নাট্যজন এম উত্তম সিংহ রতন।

সভায় বক্তারা বলেন, মনিপুরী নৃত্য এখন শুধু মনিপুরী সম্প্রদায়ের নয়, বাঙালি জাতী ও সংস্কৃতির ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। বাঙালির জাতীয় সংস্কৃতিতে যোগ হয়েছে মনিপুরী নৃত্য। মনিপুরী নৃত্য দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বে সুনাম কুঁড়াচ্ছে। যা বাঙালি জাতির জন্য গৌরব ও অহংকারের। বাঙালি জাতি গোষ্ঠীর সংস্কৃতির সঙ্গে মনিপুরী সংস্কৃতির মেলবন্ধনে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

আলোচনা সভা শেষে হোলি উৎসব উপলক্ষে এমকা, গতী সুধা, নৃত্যশৈলী, ছন্দ নৃত্যালয়ের শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন। এছাড়াও রাতে এমকা ও বহর মনিপুরী পাড়ার নারী শিল্পীরা ধর্মীয় নৃত্য ‘চালি পারেং’ ও ‘হোলি পালা’ পরিবেশন করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০১০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২১
এনইউ/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।