ঢাকা, শুক্রবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

আইসিইউ ও শয্যা সংকট সিলেটের করোনা হাসপাতালে

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০২১
আইসিইউ ও শয্যা সংকট সিলেটের করোনা হাসপাতালে সিলেটের করোনা হাসপাতাল

সিলেট: দেশে করোনায় মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছিল সিলেট থেকেই। যুক্তরাজ্যে করোনার নতুন ধরনের স্ট্রেইনও পাওয়া গেছে সিলেটেই।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) গবেষণায় ৩০ ধরনের করোনার সন্ধান মিলেছে, তাও ৬টি নমুনা বিশ্বের কোথাও নেই, আছে সিলেটে।   
 
করোনার প্রতিকূল পরিস্থিতির দিক থেকে সিলেট এগিয়ে থাকলেও স্বাস্থ্য সচেতনতা, চিকিৎসা ব্যবস্থায় পিছিয়ে রয়েছে এ অঞ্চল। করোনার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সিলেটের অবস্থা ভয়াবহ হচ্ছে। দিনের পর দিন বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যুও।
 
করোনার ভয়াবহতা শুরুর আগেই শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে করোনার বিশেষায়িত শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে।
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা রোগীর চিকিৎসায় বিশেষায়তি শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালটিতে ৯০টি শয্যা রয়েছে। করোনার নতুন ঢেউ আসার পরপরই প্রায় সব শয্যাই রোগীতে পরিপূর্ণ থাকে। হাসপাতালটিতে আইসিইউ শয্যা আছে ১৬টি। তার মধ্যে যন্ত্রপাতি নষ্ট ৫টির। যেগুলো আদৌ মেরামত করা হয়নি। অবশিষ্ট ১১টি শয্যা দিয়ে চলছে মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসা। কিন্তু ওই ১১টি শয্যা সর্বক্ষণই পরিপূর্ণ থাকে। নতুন মুমূর্ষু রোগী এলে ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থা নেই জানান সংশ্লিষ্টরা।  
 
হাসপাতালটির আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র বাংলানিউজকে বলেন, রোগীর চাপ বেশি থাকায় কেবল করোনা পজিটিভ ও করোনা সন্দিগ্ধ গুরুতর রোগীদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। কেননা, হাসপাতালে ৯০ শয্যার মধ্যে ৬টি খালি আছে। আর ১৬টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ৫টির যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকায় অব্যবহৃত রয়েছে।
 
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে করোনা পজিটিভ ৩৫ জনসহ ৮১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নতুন করে ভর্তি হয়েছেন আরও ৮ জন। এরমধ্যে করোনা আক্রান্ত ৮ জনসহ ১১ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়াতে তাদের আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
 
ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বাংলানিউজকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে মানুষ আগের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। করোনার নতুন স্ট্রেইন ছড়িয়ে পড়ায় একজনের দ্বারা শ’খানেক লোক আক্রান্ত হতে পারেন। এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসককে আরও কঠোর হতে হবে।
 
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের মধ্যে করোনার ভয়াবহতার দিক থেকে সিলেট বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে থাকলেও চিকিৎসা ব্যবস্থায় রয়েছে অপ্রতুলতা। এরপরও মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি না পাওয়া করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। জনসমাগমস্থলেও মানুষের মুখে নেই মাস্ক। কারো মাস্ক পরা থাকলেও থাকে থুঁতনির নীচে। সেই সঙ্গে করোনার টিকা নিতেও বেখেয়াল এ অঞ্চলের মানুষ। এসব কারণে ফের করোনা ঝুঁকিতে এগিয়ে সিলেট।
 
সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, গত এক সপ্তাহ যাবত সিলেটে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা রোগী। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যু সংখ্যাও। অথচ টিকা গ্রহণের হারের দিক থেকে সিলেটের অবস্থা খুবই নাজুক। গত ৭ ফেব্রুয়ারি সিলেটে গণটিকা দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু বিভাগে প্রায় এক কোটি মানুষের বিপরীতে ০১ এপ্রিল পর্যন্ত ২ লাখ ৭৮ হাজার ৭১৯ জন টিকা নিয়েছেন। অথচ বিভাগে প্রথম ধাপে ৪ লাখ ৪৪ হাজার টিকা আসে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২১
এনইউ/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।