রাজশাহী: মাহে রমজান উপলক্ষে রাজশাহীতে নিত্যপণ্য বিক্রি শুরু করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। রাজশাহী মহানগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে খেজুর-ছোলাসহ ছয়টি পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে অভিযোগ উঠেছে পূর্ণ প্যাকেজ ছাড়া অনেক পয়েন্টেই এ নিত্যপণ্য ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে না। যদিও এমন কোনো নিয়ম বেঁধে দেয়নি টিসিবি। যার যে পণ্যটি প্রয়োজন তিনি সেই পণ্যটিই টিসিবির বিক্রয় পয়েন্ট অথবা ট্রাক থেকে কিনতে পারবেন। কিন্তু কতিপয় ডিলার নিজ ব্যবসায়ীক স্বার্থে সাধারণ ক্রেতাদের জিম্মি করছেন।
মহানগরের বেশ কয়েকটি পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, মাহে রমজান উপলক্ষে টিসিবির পণ্য দিচ্ছে সরকার। চিনি, সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, খেজুর, ছোলা, পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। পুরো রমজান পর্যন্ত টিসিবির এ বিক্রি কার্যক্রম চলবে। প্রথমে রাজশাহী জেলা ও মহানগর মিলে ২৬টি পয়েন্টে ডিলার পণ্য বিক্রি করছিল। পরে ৭ এপ্রিল থেকে চারটি বেড়ে ৩০টি পয়েন্টে টিসিবির পণ্য বিক্রি চলছে।
বর্তমানে রাজশাহী মহানগরের কোর্ট স্টেশন, তালাইমারী, নওদাপাড়া, চিড়িয়াখানার সামনে, সাহেববাজার ভুবন মোহন পার্কে, গোরহাঙ্গা কবরস্থানের সামনে টিসিবির পণ্য মিলছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
তবে কারও তেল, চিনি, ডাল প্রয়োজন, পেঁয়াজের দরকার নেই। আবার কারও পেঁয়াজ প্রয়োজন, অন্য পণ্য লাগবে না। কিন্তু টিসিবি ডিলারদের ট্রাক থেকে পণ্যগুলো এভাবে কিনতে পারছেন না। একসঙ্গে প্যাকেজের মতো তাদের সবই কিনতে হচ্ছে। এতে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
নিজেদের ব্যবসায়ীক সুবিধায় ডিলাররা এভাবে ইচ্ছেমতো পণ্য বিক্রি করছেন। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নিম্নআয়ের ক্রেতারা। অথচ ‘প্যাকেজ’ করে পণ্য বিক্রির কোনো নিয়ম নেই। অভিযোগ উঠার পর টিসিবি কর্মকর্তারা মৌখিকভাবে ডিলারদের সতর্ক করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না! কেউ শুধু একটি বা দু’টি পণ্য চাইলে তাকে ফেরত দিচ্ছে।
মহানগরের আমচত্বর এলাকায় টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয়। এর সামনেই টিসিবির পণ্য বিক্রি হয়। সেখানে ডাল, তেল ও চিনি কিনতে পবা উপজেলার মথুরা গ্রাম থেকে আসা কৃষক শহীদুল জানালেন, বাড়ি থেকে এখানে যাতায়তের ভাড়া ৩০ টাকা। বাজারের চেয়ে কম মূল্যে পণ্য পাওয়া বলে এখানে এসেছেন। সয়াবিন তেল নিতে চান। কিন্তু পেঁয়াজ বা অন্য পণ্যগুলো কেনার টাকা তার কাছে নেই। অথচ এগুলো নিতে না চাওয়ায় তাকে লাইন থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। বিক্রয়কর্মী বলেছেন সবই নিতে হবে। একই অবস্থা অন্যদের ক্ষেত্রেও। ভুক্তভোগীর সংখ্যা অনেক।
তবে ডিলার আজিম শেখ বলেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, যারা একটা-দুইটা পণ্য নেবে তাদের সবার শেষে দেওয়া হবে বলে জানানো হচ্ছে। অপেক্ষা করতে হবে। প্যাকেজ না নিলে পণ্য দেওয়া হবে না এমন কথা বলা হয়নি দাবি করেন।
আর টিসিবির আঞ্চলিক কার্যলয়ের প্রধান রবিউল মোর্শেদ বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের সর্বোচ্চ সুবিধার জন্যই কম দামে টিসিবির মাধ্যমে নিত্যপণ্য বিক্রি করছে। সেখানে ক্রেতাদের সঙ্গে এমন আচরণের নূন্যতম সুযোগ নেই। যার যেটা প্রয়োজন তিনি ঠিক সেই পণ্যই কিনবেন।
প্যাকেজে পণ্য বিক্রি করা যাবে না। অভিযোগ উঠার পর এ ব্যাপারে ডিলারদের মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এরপরও তারা এমন করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে অভিযুক্ত ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন টিসিবির এ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২১
এসএস/আরবি