ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীতে বন্ধুর হাতে আনসার সদস্য খুন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২১
রাজশাহীতে বন্ধুর হাতে আনসার সদস্য খুন আটক অভিযুক্ত মাধব সরকার

রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীতে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে আনসার বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। তিনি আনসার বাহিনীর হ্যান্ডবল দলের খেলোয়াড়।

এছাড়াও তিনি ভালো বাস্কেটবল খেলতেন।  

শনিবার (১০ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে মহানগরীর হেতেমখাঁ এলাকায় ওয়াসার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের ভেতর আনসারদের একটি কোয়ার্টারের সামনে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম মিজানুর রহমান মিজান (৩৫)। মহানগরীর হেতেমখাঁ সবজিপাড়া মহল্লায় তার বাড়ি। বাবার নাম মো. মন্টু। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য মাধব নামে এক ব্যক্তিকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।

মাধবের বাড়ি হেতেমখাঁ এলাকায়। তিনি মিজানেরই বন্ধু ছিলেন। এলাকায় সুদ আর মাদকের ব্যবসা করেন মাধব।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওয়াসার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের পাশে রেজা নামে এক ব্যক্তির একটা দোকান আছে। লকডাউন চলার কারণে মিজানুর ওই দোকানীকে লাইট বন্ধ করে ব্যবসা করতে বলেন। কিন্তু কেন লাইট বন্ধ করতে হবে এই প্রশ্ন তুলে মিজানুরের সঙ্গে তর্কে জড়ান মাধব।

এ সময় তাদের দুজনের হাতাহাতিও হয়। তখন অন্য বন্ধুরা তাদের থামান। এরপর মিজানুর প্লান্টের ভেতরের এলাকায় ঢুকে আনসারদের কোয়ার্টারের সামনে সেখানকার সদস্যদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পর মাধব গিয়ে তাকে আচমকা ছুরিকাঘাত করেন।

মাধবসহ আরও কয়েকজন তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মিজানুরকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় মাধব পালিয়ে যান। পরে অভিযুক্ত মাধব সরকারকে পুঠিয়া থেকে শনিবার দিনগত রাত সাড়ে ১১টায় গ্রেফতার করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ।

এদিকে, মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয়রা মাধবের বাড়িতে হামলার প্রস্তুতি নেন। কেউ কেউ গিয়ে বাড়ির গেট ধাক্কাধাক্কি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে।

এ সময় এলাকার লোকজন রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেন। তারা মাধবকে আটকের দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় চরম উত্তেজনায় চলছিল।

স্থানীয়রা জানান, নিহত মিজানুর রহহমান খেলোয়াড় কোটায় আনসার বাহিনীতে চাকরিতে ঢুকেছিলেন। তিনি ভালো হ্যান্ডবল ও বাস্কেটবল খেলতেন। বঙ্গবন্ধু নবম বাংলাদেশ গেমসেও তিনি আনসার বাহিনীর দলে ছিলেন। খেলা শেষে ছুটিতে তিনি বাড়ি এসেছিলেন। এসেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন।

রাজশাহী মহানগীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ জানান, ছুটিতে মিজানুর রহমান রাজশাহীতে এসেছিলেন। সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ ভবনের পাশের গলিতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এসময় বন্ধুদের সঙ্গে মোবাইলের লাইট বন্ধ করা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এর সূত্র ধরে খুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (সদর) রুহুল কুদ্দুস বলেন, মিজানুরের মরদেহের বুকের বাম পাশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলেই আছে। অপ্রীতিকর আর কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে সেটি দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২১
এসএস/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।