ঢাকা: শিল্পগোষ্ঠী হিসেবে সর্বোচ্চ সংখ্যক কপিরাইট নিবন্ধন করায় মেধাসম্পদ সুরক্ষা সম্মাননা-২০২০-এ অভিষিক্ত হয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ।
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে আন্তর্জাতিক কপিরাইট দিবস উদযাপন উপলক্ষে ‘মেধাসম্পদ সুরক্ষায় কপিরাইটের গুরুত্ব’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল সেমিনারে কপিরাইট অফিসের পক্ষ থেকে এই সম্মাননা ঘোষণা করা হয়।
এ সময় রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটস জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, মেধাসম্পদ সুরক্ষায় কপিরাইটের গুরুত্ব উপলব্ধি ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে কপিরাইট বিষয়ে সার্বিক সচেতনতা সৃজনে মূল্যবান ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখায় দেশের খ্যাতিমান শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপকে মেধাসম্পদ সুরক্ষা সম্মাননা ২০২০ এ অভিষিক্ত করা হলো।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে যারা সৃজনশীল কাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত, তাদের মাঝেও সৃজিত কর্মের কপিরাইট রক্ষার প্রতি সচরাচর সচেতনতা পরিলক্ষিত হয় না। এ ক্ষেত্রে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ভূমিকা প্রশংসনীয়। ইতোমধ্যে এই শিল্পগোষ্ঠী শিল্প-সাহিত্য এবং ওয়েবসাইট ক্যাটাগরিতে ১২৭টি মেধাস্বত্বের কপিরাইট সনদ গ্রহণ করেছে এবং নিজেদের মেধাসম্পদ সুরক্ষায় সচেতনতা ও দায়িত্বশীল আচরণের স্বাক্ষর রেখেছে।
বসুন্ধরা গ্রুপসহ আরও তিন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এই সম্মননার জন্য মনোনীত করা হয়েছে। স্থপতি ক্যাটাগরিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমর স্মৃতি ও কর্মকে যুগ যুগ ধরে নান্দনিকভাবে উপস্থাপনের বহুমুখী প্রয়াশে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধের নকশা প্রণয়নের জন্য ‘স্থপতিবৃন্দ লিমিটেড’; ফটোগ্রাফি ক্যাটাগরিতে বঙ্গবন্ধুর পুরনো ছবি থেকে নান্দনিক ও উন্নতমানের ডিজিটাল পেইন্টিং/প্রোট্রেট তৈরির জন্য হাবিবুল্লাহ আল ইমরান এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন লোগো, ডিজাইন ও অন্যান্য বিষয় কপিরাইট নিবন্ধনের জন্য ব্যাংক এশিয়া এই সম্মাননা পেয়েছে।
২০২১ সালের জন্য এই সম্মাননা পাচ্ছে, শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলার ধারণা উদ্ভাবনের জন্য কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান ও মো. ফয়জুল আলম সিদ্দিক; আঞ্চলিক গানের স্বরলিপির গ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে ভূমিকা রাখায় পিএইচপি গ্রুপ; লোক সঙ্গীতের চর্চা ও বিকাশে এবং নান্দনিক উপস্থাপন করে অবদান রাখার জন্য আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড এবং গুগল ল্যাঙ্গুয়েজ বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সফটওয়ার উদ্ভাবনের জন্য মাস্টার একাডেমির মোস্তাইন বিল্লাহ।
আয়োজনে এই সম্মাননার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়। কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আয়োজনের মাধ্যমে এসব সম্মাননার জন্য স্মারক দেওয়া হবে বলে জানান রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটস জাফর রাজা চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কৌশলগত কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে শুরু করেছি। যেমন: ই-কপিরাইট সিস্টেম, অনলাইন রেকর্ডিং ডকুমেন্টারি সিস্টেম। ভবিষ্যতে জাতীয় পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চূড়ান্ত কপিরাইট আইন-২০২১ পাসের পর এর যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে কপিরাইটের সুফল আনতে চাই।
তিনি বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে আমরা মতামত নিয়েছি। সেসব মতামতের ভিত্তিতে সমন্বয় করে এই নতুন আইনটি প্রণয়ন হতে যাচ্ছে। সেটি পাস করার পর কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। একই সঙ্গে আমরা আমাদের মেধাস্বত্বকে সুরক্ষিত করতে পারবো।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের ছয়টি ক্ষেত্রে ফোকাস করা দরকার। এগুলো হলো—তথ্যপ্রযুক্তি আধুনিকীকরণ, ব্যবসায়ীদের ব্যবসার ক্ষেত্রে তাদের প্রক্রিয়াকে অনুকূল করা, সাংগাঠনিকভাবে নিজেদের পরিচালনা করতে পারা, শিক্ষা, বাস্তবতা এবং কপিরাইট আইন। এসব ক্ষেত্রে নিরপেক্ষভাবে আমরা আমাদের দায়িত্বগুলো যেন পালন করতে পারি সেভাবেই আমরা কাজ করতে চাই।
অনুষ্ঠানে আরও যুক্ত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন, বাংলাদেশ কপিরাইট বোর্ডের সভাপতি ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাবিহা পারভীন, কপিরাইট ডেপুটি রেজিস্ট্রার মুহম্মদ রায়হানুল হারুন, ডিপিডিটি রেজিস্ট্রার মো. আব্দুস সাত্তার, মিউজিক কম্পোজার সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি নকিব খান, সিঙ্গার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক কুমার বিশ্বজিৎ, গীতিকবি সংঘের সিনিয়র সদস্য কবির বকুল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২১
এইচএমএস/এমজেএফ