ঢাকা: ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনে করোনা ইউনিটে আবারও অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
ওয়ার্ডে ভর্তি করোনা রোগীদের পাশে সিড়ির করিডোরে রোগীদের ব্যবহৃত পরিত্যক্ত ফোম স্তুপ করে রাখা হয়েছে।
গত ১৭ মার্চ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় করোনা ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন আইসিইউ থেকে স্থানান্তরের সময় তিনজন রোগী মারা যায়। এই অগ্নিকাণ্ডের সময় দশতলা নতুন ভবনে করোনা ইউনিটের রোগীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডে আইসিইউতে রোগীদের কাজে ব্যবহৃত সবকয়টি মেশিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সোমবার (৩ মে) বিকেলের দিকে ঢামেকের নতুন ভবনের পাঁচ তলায় গিয়ে দেখা যায়, লিফট সংলগ্ন খালি জায়গায় হাসপাতালের রোগীদের ব্যবহৃত পরিত্যক্ত বিছানার ফোমগুলি স্তুপ করে রেখেছে। এছাড়া তৃতীয় ও বেশ কয়েক তলায় একই দৃশ্য দেখা যায়।
হাসপাতালে চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত একাধিক ব্যক্তি শঙ্কা করছেন, কোন কারণে জমিয়ে রাখা এই পরিত্যক্ত ফোমের সাথে আগুনের স্পর্শ হলেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।
সূত্রটি আরও জানান, হাসপাতলে একাধিকবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও কারো কোন মাথা ব্যথা নাই। পরবর্তীতে আবার যেন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা না ঘটে, এ ব্যাপারে কারো সর্তকতাও নাই। এভাবে রোগীদের কাজে ব্যবহৃত পরিত্যক্ত ফোমগুলি ওয়ার্ডের পাশেই জমিয়ে রাখার কোনো মানেই হয় না।
সূত্রটি আরও জানান, ওই নতুন ভবনে প্যাথলজি বিভাগসহ কয়েকটি জায়গায় কয়েকবার আগুন লেগেছিল। এছাড়া গতকাল ২ মে রোববার ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের পিছনের মাঠে ফেলে রাখা পিপিই স্তুপে আগুন ধরে যায়। পরে সেখানে উপস্থিত থাকা লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে। তবে ছোট আগুন হলেও মাঠ সংলগ্ন ডাক্তারদের কলোনির পাশে গাছেও আগুনের লেলিহান উঠে যায়।
ওই সূত্রটি আরও জানান, চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুরাতন ভবনের চার তলায় ব্যালকনিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেটাও ছিল ময়লার স্তুপ থেকে আগুন। ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের যতগুলো আগুনের ঘটনা ঘটেছে সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিভিয়ে ফেলে। তারমানে এতেই বোঝা যায়, হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র থাকলেও সেগুলো দিয়ে কোন কাজ হয় কিনা তার জানা নেই।
নতুন ভবনে একাধিক ব্যক্তি জানান, হাসপাতালে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা দেখভালের কাজ ওয়ার্ড মাস্টারদের। হাসপাতালে কোথায় সমস্যা, কোথায় ময়লার স্তুপ জমে আছে - ওয়ার্ড মাস্টাররা এগুলো দেখে, লোক দিয়ে কাজ করিয়ে থাকে। অথচ নতুন ভবনে করোনায় ইউনিটে রোগীদের ব্যবহৃত পরিত্যক্ত বিছানার ফোমের স্তুপ পড়ে থাকতে দেখে মনে হয় নতুন ভবনে কোন ওয়ার্ড মাস্টার নাই।
এ ব্যাপারে নতুন ভবনের ওয়ার্ড মো. রিয়াজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নতুন ভবনে রোগিদের ব্যবহৃত পরিত্যক্ত বিছানার ফোম নতুন ভবনের বেশ কয়েক জায়গায় স্তুপ করে রাখা হয়েছে। কারণ এগুলি সরকারি মালামাল। এগুলোর একটি হিসাব আছে। এ ব্যাপারে রাতেই হাসপাতালের পরিচালক স্যার নির্দেশ দিয়েছে সেগুলো সরিয়ে ফেলার জন্য। ইনশাআল্লাহ আগামীকাল সকাল থেকে সেগুলো সরানোর কাজ শুরু করা হবে।
এর আগে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত শুনে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আমি এখনি সেগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৮ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২১
এজেডএস/এমকেআর