ঢাকা, বুধবার, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

টাকার জন্য জীবন সংকটে ফুটফুটে শিশু ইমলার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৩ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২১
টাকার জন্য জীবন সংকটে ফুটফুটে শিশু ইমলার

রাজশাহী: ছবির এই শিশুটির নাম আয়াতী খাতুন ইমলা। দেড় বছর বয়সী এই শিশুটি জন্মের পর থেকেই দুরারোগ্য মিনিংগোসেল (এক ধরনের টিউমার) রোগে ভুগছে।



মিনিংগোসেলের কারণে শিশুটি পিঠে ভর দিয়ে শুতে পারে না। সারাক্ষণ উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে হয়। এর আগে তার শরীরে একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। এখন তার শরীরে আরও একটি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। তাহলেই নতুন জীবন পাবে শিশু ইমলা।

এখন যতই দিন যাচ্ছে, ইমলার শরীরে থাকা মিনিংগোসেলের অবস্থা ততই খারাপের দিকে যাচ্ছে। শিশুটিকে বাঁচাতে শিগগিরই অস্ত্রোপচার করা প্রয়োজন। কিন্তু টাকার অভাবে তা করাতে পারছেন না শিশুটির বাবা। তাই শিশু ইমলার চিকিৎসা নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুরো পরিবার। ইমলার বাবার নাম জালাল খান গোলাপ। রাজশাহী মহানগরীর বিলসিমলা বন্ধ গেট এলাকায় তার বাড়ি।

জালাল খান আগে চায়ের দোকান চালাতেন। ২০১২ সালে একটি দুর্ঘটনার পর সেই চায়ের দোকানও তাকে ছেড়ে দিতে হয়। এরপর দিনমজুরের কাজ করেন। কিছুদিন আগে পাইলিংয়ের কাজ করলেও করোনার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে কাজ। এতে সংসার খরচ চালাতেই হিমশিম খাচ্ছেন তিনি।

এর ওপরে ইমলার চিকিৎসার খরচ চালানো অসম্ভব তার কাছে। কিন্তু জরুরি অস্ত্রোপচার না হওয়ার কারণে ইমলার শারীরিক জটিলতা দিন দিন বাড়ছেই। ফলে ফুটফুটে এই শিশুটি এখন তীব্র যন্ত্রণায় কাতর হয়ে উঠেছে।

ইমলার পরিবার জানায়, ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) ইমলার জন্ম হয়। জন্মের পরেই চিকিৎসকসহ পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারেন অন্য শিশুর মত স্বাভাবিকভাবে জন্ম নেয়নি শিশুটি। তখন থেকেই শিশুটির চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।  

চিকিৎসকরা তখন জানান, শিশুটির অস্ত্রোপচার করতে হবে। এছাড়া ইমলা সুস্থ হয়ে উঠতে পারবে না। তবে ইমলার বয়স মাত্র একদিন হওয়ার কারণে তখন অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি। তাই ইমলার বড় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন চিকিৎসকরা। এরপর কোনো ধরনের চিকিৎসা ছাড়াই শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর ইমলাকে বাসায় নিয়ে আসে তার পরিবার। কিন্তু বাসায় কোনো চিকিৎসা না হওয়ার কারণে দিন দিন অবস্থা আরও খারাপের দিকে যেতে শুরু করে।

২০২০ সালের ১৮ মার্চ হঠাৎ করেই মিনিংগোসেল ফেটে হয়ে যায়। এতে অবস্থা অরও সংকটপন্ন হয়ে ওঠে ইমলার।

সেদিনই রামেক হাসপাতালে আবারও ভর্তি করানো হয় ইমলাকে। চিকিৎসার পর ইমলাকে আবারও বাসায় নিয়ে আসা হয়। এরপর ২৫ জুলাই দ্বিতীয়বারে মতো ফেটে যায় মিনিংগোসেল। ইমলাকে নিয়ে এবার পরিবারের সদস্যরা রামেক হাসপাতালে গেলে চিকিৎসরা শিশুটিকে ভর্তি নেয়নি। এরপর শিশুটিকে নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে একজন হৃদয়বান ব্যক্তি তার সহায়তায় এগিয়ে আসেন। তার সাহায্যেই ঢাকা পপুলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর একটি অস্ত্রোপচার হয়।

চিকিৎসকরা জানান, কয়েক মাস পর আবারও আরেকটি অস্ত্রোপচার করতে হবে। তাহলে তিনি সুস্থ হয়ে যাবে। এখন দ্বিতীয় অস্ত্রোপচারের টাকা জোগাড় করতে না পারায় শিশুটিকে নিয়ে আবারও বিপাকে পড়েছেন তার বাবা।

ইমলার বাবা জালাল খান গোলাপ বলেন, আামার মেয়ের আর একটি অপারেশন দরকার। কিন্তু টাকা নেই বলেই এখনও মেয়েটির অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে না। এই অপারেশন হলেই আমার মেয়ে সুস্থ হয়ে যাবে। তিনি তার মেয়ের জন্য সহায়তা কামনা করেন। শিশু ইমলার বাবা জালাল খানের বিকাশ নম্বর ০১৭২০৩৫৮০০০। অগ্রণী ব্যাংকে তার হিসাব নম্বর-০২০০০০৩০৪৯৬১৪ ক্যান্টনমেন্ট শাখা, রাজশাহী। এই দুটি মাধ্যমে শিশুটির জন্য সহায়তা পাঠানো যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৩ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২১
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।